চট্টগ্রামে বসানো হচ্ছে আরও ১ লাখ প্রিপেইড মিটার

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) আরও এক লাখ গ্রাহক পাচ্ছেন প্রিপেইড মিটার। মিটার বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে। জাপান থেকে আনা হচ্ছে এসব প্রিপেইড মিটার।

জানা যায়, আগামী ২৯ নভেম্বর মিটারের প্রথম চালান দেশে আসতে পারে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

কেজিডিসিএল সূত্র জানায়, কর্ণফুলী গ্যাসের মোট ৬ লাখ আবাসিক গ্রাহক রয়েছেন। তাদের মধ্যে ন্যাচরাল গ্যাস ইফিসিয়েন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে প্রথম দফায় ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনে কেজিডিসিএল। জাইকার অর্থায়নে ২০১৫ সালে হাতে নেওয়া ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ২০১৯ সালে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্যাস সাশ্রয়সহ গ্রাহক ভোগান্তি কমে আসায় প্রিপেইড মিটার স্থাপনে নতুন আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ।

‘আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে ২০২১-এর ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ মিটার স্থাপনের জন্য দ্বিতীয় ধাপে প্রকল্প হাতে নেয় কেজিডিসিএল। প্রাথমিক পর্যায়ে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।

সংস্থাটির নিজস্ব অর্থায়নের প্রকল্পটি মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় রোধ, সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত ও গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করা। তবে নানা জটিলতার কারণে পিছিয়ে যায় এ প্রকল্পের কাজ। এরপর প্রকল্পে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। পাশাপাশি সময় বেড়ে হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।

কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. নাহিদ আলম বলেন, চট্টগ্রামে আরও এক লাখ প্রিপেইড মিটার বসছে। এসব মিটার বসানোর জন্য গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাপানি প্রতিষ্ঠান টয়োকিকি কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এসব মিটার নগরী ও জেলায় বসানো হবে। গ্রাহক যত গ্যাস ব্যবহার করবেন তত বিল দিতে হবে। এর সঙ্গে ১০০ টাকা মিটার চার্জ দিতে হবে। এর বাইরে ডিমান্ড চার্জ বা ভ্যাট বাবদ কোনও অর্থ গুনতে হবে না গ্রাহকদের।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে আবাসিকে ৬ লাখ গ্যাসের চুলা আছে। প্রথম ধাপে ৬০ হাজার গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হয়। এতে দেখা গেল অনেক গ্রাহকের বিল কমে এসেছে। এতে সাশ্রয় হয় গ্যাস। প্রিপেইড মিটারের কারণে গ্যাস অপচয় কমেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কেজিডিসিএল দ্বিতীয় ধাপে আরও এক লাখ মিটার বসানোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হচ্ছে ২৯১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। আগামী ২৯ নভেম্বর প্রিপেইড মিটারের প্রথম চালান দেশে পৌঁছাবে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে মিটার লাগানোর কাজ শুরু হবে।

এই মিটারে গ্রাহকের খরচ কমবে জানিয়ে নাহিদ আলম বলেন, প্রিপেইড মিটারে প্রতি চুলায় গ্রাহকের সাশ্রয় হবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জের মতোই গ্রাহকরা মিটারে প্রয়োজনীয় গ্যাসের টাকা রিচার্জ করতে পারবেন।

কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে নগর ও জেলার এক লাখ গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর সদরঘাট, বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ, চকবাজার, হালিশহর, পাহাড়তলী, খুলশী, ইপিজেড, বাকলিয়া, কোতয়ালি, ডবলমুরিং, বন্দর, পতেঙ্গা, আকবরশাহ এবং জেলার হাটহাজারী, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী এবং চন্দনাইশ উপজেলার কেজিডিসিএল গ্রাহকরা প্রিপেইড মিটার পাবেন।

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলাকেজিডিসিএলগ্যাসমিটার
Comments (০)
Add Comment