বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কোনো দলের একক কৃতিত্ব নয়। ১৯৭১ সালের ছাব্বিশে মার্চ শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে আমাদের স্বাধীনতা অর্জন অনেক বিলম্বিত হতো।
সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বশূন্যতা ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে হয়েছিল। শহীদ জিয়া শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ক্ষান্ত হননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।
একটি মহল ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে নতুন করে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই ষড়যন্ত্র আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা রুখে দেব।’
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে হালিশহর নয়া বাজার বিশ্বরোড মোড়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম-১০ নির্বাচনি এলাকাধীন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে র্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে কোনো অপশক্তি দমিয়ে রাখতে পারবে না জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হচ্ছেন একজন শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধারা হলেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শহীদ জিয়া প্রতিষ্ঠিত বিএনপি হচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার দল।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া সত্বেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে কোনো রাজনৈতিক সুবিধা নেননি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে এবং মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বের মিথ্যা দাবি করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের মাধ্যমে দুনীতি ও লুটপাট করেছে।
আগস্ট বিপ্লবে দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে নির্বাসিত কর্তৃত্ববাদী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের দেশ ও দেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী যেকোনো চক্রান্ত দেশের জনগণ এবং বিএনপি রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করবে। অন্তবর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করেছে তবে এই কার্যক্রম হতে হবে দ্রুতগতিতে। অতি দ্রুত সংস্কার কাজ শেষ করে নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না। কারণ নির্বাচিত সরকারের জনগণের কাছে জবাবদিহি রয়েছে।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অতীতে আওয়ামী লীগ মনোনীত বিনা ভোটের মেয়র যারা ছিলেন তারা সিটি করপোরেশনকে দুর্নীতি ও লুটের মাধ্যমে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছেন। সিটি করপোরেশন মালিকানাধীন মার্কেট, দোকান ও বাণিজ্যিক স্পেসগুলো দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। আমি নগর পিতা হিসেবে নয়, জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে চাই। চট্টগ্রামকে একটি পরিকল্পিত সবুজ ও পরিচ্ছন্ন নগর হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন ডিপ্টির সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এএম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাবেক কাউন্সিলর শামসুল আলম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, তরুণ বিএনপি নেতা ও শিক্ষাবিদ সাঈদ আল নোমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহার, পাহাড়তলী থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন জিয়া, হালিশহর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাংগীর আলম, মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক জেলী চৌধুরী প্রমুখ।