২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সব আসামি খালাস

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ডের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদন) শুনানি নিয়ে রোববার (১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা শুরু করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, রাসেল আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার। লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টুসহ দণ্ডিত বেশ কয়েকজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী এস এম শাহজাহান। এছাড়া লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আরও তিন আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত আলোচিত এ মামলার ঘোষণা করেছিলেন।

বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দেন। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ১১ আসামিকে।

এই মামলায় গ্রেনেড নিক্ষেপ ও বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং এ অপরাধে সহায়তা করে হত্যার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন— আলহাজ্ব মাওলানা মো. তাজউদ্দিন, মো. লুৎফুজ্জামান বাবর, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, মো. আব্দুস সালাম পিন্টু, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, মাওলানা আব্দুস সালাম, মোহাম্মদ আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে মো. ইউসুফ ভাট, আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মদ ওরফে জি. এম, মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, হোসাইন আহম্মেদ তামিম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে কাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ওরফে খালিদ সাইফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ ও মো. উজ্জল ওরফে রতন।

এই ১৯ জনকে ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইনের (সংশোধনী-২০০২) ৩ ও ৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন বিচারক। রায়ে বলা হয়, মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আসামিদের গলায় ফাঁসি ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।

রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন— তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া, হারিছ চৌধুরী, শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে আবু ওমর আবু হোমাইরা ওরফে পীর সাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওরফে আব্দুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুমন ওরফে আব্দুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মুহিবুল মুত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন, আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন, লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, মো. খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মো. ইকবাল, কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই ও রাতুল আহমেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবু।

ওই বছরের ২৭ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন। এরপর চলতি বছরের গত ৩১ অক্টোবর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। গত ২১ নভেম্বর শুনানি শেষ হয়‌।

এসআই/আজকের বেলা
২১ আগস্টআজকের বেলাআদালতমামলা
Comments (০)
Add Comment