রুমায় রাত ৮টার দিকে এসে ঘটনা ঘটিয়েছে, তার পরের দিনই আবার থানচিতে ঠিক একই রকম ঘটনা ঘটিয়েছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা জঘন্য অপরাধ করেছে। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। রাষ্ট্র এখানে চুপ থাকতে পারে না। রাষ্ট্রের যা যা করণীয় তাই করবে। সেনাবাহিনীর, বিজিবি, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ফোর্স আরো বৃদ্ধি করা হবে। কোনো ধরনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজকে আমাদের এই ভূখণ্ডে অপকর্ম করতে দেওয়া হবে না।
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বান্দরবান সার্কিট হাউসে বিকেল ৩টায় সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বান্দরবানের জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যথেষ্ট ধৈর্য ধরে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আলোচনা চলা অবস্থায় আলোচনায় না গিয়ে তারা তাদের অবস্থান জানান দিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অস্ত্রের মহড়া আর সহ্য করা হবে না। এলাকার শান্তি বজায় রাখতে যা যা করার তাই করব।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে তিনটি জেলায় শান্তির পরিবেশ রয়েছে। এলাকার বাসিন্দা, নেতারা, জনপ্রতিনিধি ও সরকার মিলে সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করেছে। এখানকার সৌন্দর্য শুধু দেশের নয়, বিদেশেও এখানকার সৌন্দর্য পরিচিত। সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও সামরিক বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে যৌথ অভিযান চালানো হয়। কোনো ধরনের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজকে আমাদের এই ভূখণ্ডে অন্যায় অপকর্ম করতে দেওয়া হবে না।
কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনকে বিদেশিদের মদদ আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এ ধরনের কোনো তথ্য আমরা পায়নি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা যদি বিদেশে গিয়ে আশ্রয়ে থাকে তাদেরকে ইন্টাপোলের মাধ্যমে দেশের মাটিতে এনে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবানের সাংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসার ভিডিপি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ও সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে তারাবি নামাজের সময় বান্দরবানের রুমা শাখা সোনালী ব্যাংক ও আশেপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে শতাধিক সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা। মসজিদ থেকে ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে ধরে নিয়ে ব্যাংকের ভেতরে মারধর করে তারা। পরে তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সেসময় ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের ৮টি চাইনিজ রাইফেল, ২টি এসএমজি, ৪টি শটগান ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনার ১৬ ঘণ্টা পর থানচিতে আরও দুটি ব্যাংকে ডাকাতি করে দুর্বৃত্তরা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে অপহৃত সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিনকে রুমা বথেল পাড়া থেকে উদ্ধার করে র্যাব। এর পরপরই থানচি বাজার ও থানা এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনেন স্থানীয়রা। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি চলে। তবে এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।