সময়টা ১৯৯৩ সাল। তখনকার আন্ত:স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট যেটি সর্বমহলে জুনের খেলা নামে পরিচিত ছিল। পুরো উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতো সেই টুর্নামেন্টে। মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি শক্তিশালী ফুটবল টিম গঠন করেছিল তখন।
সবার সাথে লড়াই করে ঐ আসরের ফাইনালে করেরহাটের হাবিলদারবাসা উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বর্তমান নাম মিরসরাই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় দল।
তবে সে গর্বের প্রতীক চ্যাম্পিয়ন ‘সীল’ এখন পড়ে রয়েছে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষের মেঝেতে। যার পাশেই অবস্থান করছে বিদ্যালয়ের শৌচাগার। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সোহাগ সামাদ।
সেই চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক আশিকুর রহমান নিপু আজকের বেলাকে বলেন, আমাদের সোনালী অতীতের অর্জন আজ আস্তাকুঁড়ে।
বিদ্যালয়ের ৯৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় পাবেল বলেন, এই চ্যাম্পিয়ন চিহ্ন আমাদের গৌরবের অর্জন। আজ সেটি এভাবে অবহেলিত হয়ে আছে যা নতুন প্রজন্মের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলবে। এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
বিদ্যালয়ের ৯৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন পিটুর ফেসবুকে লেখেন, ‘রৌদে শুকিয়ে, বৃষ্টিতে ভিজে প্রশিক্ষণ নিয়ে মিরসরাইয়ের আওলিয়াদের কবর জিয়ারত করে দল সাজিয়েছে মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। গোল কিপারের দায়িত্বে ছিলেন শওকত, ২নং গোলকিপার রবিউল হোসেন। ডিফেন্সে ছিলেন মোতাহার হোসেন, মীর হোসেন, বিল্টু কুমার সিংহ, হাফ বেগ নুরুনবী, লেফট উইং পাভেল, রাইট উইং এলাহী, লেফট ব্যাক রাহাত, রাইট ব্যাক সুমন, স্ট্রাইকার নিপু ও টিটুসহ অন্যরা।
ফাইনাল খেলে জয় লাভ করে আন্ত:স্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়ে আজকের এই অবহেলিত সীল নিয়ে কি যে আনন্দ মিছিলে মিছিলে আনন্দে আত্নহারা হয়ে ফুটবল একাদশকে সেলুন ওয়ালায় ফ্রী চুলকাটার দায়িত্ব নিয়েছিলো, রেস্তোরাঁ মালিক ফ্রী খেতে দিয়েছিল। আমজনতা আনন্দে বিভোর ছিল। আজকের এই অবহেলিত সীল-কে কেন্দ্র করে কত উন্মাদনা। এই সীল তখনকার সকল ফুটবলভক্তের আবেগ। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই সীল-কে সর্বোচ্চ সন্মানেরসহীত পবিত্র স্থানে রেখে আমাদের আবেগকে চিরস্থায়ী মূল্য দিবেন।’
মিরসরাই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন আজকের বেলাকে বলেন, এটি তথ্য বিভ্রাট। এমন কিছু ঘটেনি। সব চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আমরা সংরক্ষণ করে রেখেছি। লাইব্রেরি রুম পরিষ্কার করে রাখার জন্য সেটি রেখেছিল। ফেসবুকে কেউ না জেনে পোস্ট দিলে কিছু করার নেই।