উপজেলা পরিষদ নির্বাচন—মিরসরাইয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন প্রার্থীরা

মিরসরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিশেষ করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষনার পর থেকেই পুরাতন কর্মী, আত্মীয়-স্বজনদের খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় গুঞ্জন ছিল দলের সিগন্যাল পেলে নির্বাচনে অংশ নেবেন অনেক নেতা। তবে দিন গড়াতে মাঠের লড়াইয়ে এখন দৃশ্যমান আওয়ামী লীগের ৪ প্রার্থী।

উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন থেকে সাহেরখালী– বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও বাজারে চষে বেড়াচ্ছেন তারা। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে জোর প্রচারণা। সেসব প্রচারণায় তুলে ধরছেন তাদের অতীতের কার্যক্রমের ফিরিস্তি।

এদিকে সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপি অংশ না নেওয়ার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত। সে হিসেবে মিরসরাইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে।

জানা গেছে, মিরসরাইয়ের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচিত হচ্ছে আসন্ন উপজেলা নির্বাচন। এখানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও পেশাজীবী সংগঠনের ৪ জন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের আকাঙ্খা নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও প্রার্থী হতে আকাঙ্খার কথা শুনিয়েছেন অনেকেই।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন— চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ও করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন ও মিরসরাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এমরান উদ্দিন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান আজকের বেলাকে বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরা আমার কাছে প্রত্যাশা করে এবং আমি সময়ের প্রয়োজনে প্রার্থী হচ্ছি।

মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য ফেরদৌস হোসেন আরিফ দলের প্রতি তার ও পরিবারের ত্যাগ বিসর্জনের দাবি তুলে এবং নিজের প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা আরো বড় পরিসরে কাজে লাগাতে দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।

আরিফ আজকের বেলাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিরসরাইয়ের রাজপথে যৌবনের সবটুকু সময় বিলিয়ে এসেছি। রাজনীতির যুদ্ধে নিজের দুই সহোদর আরফিন ও তারিফকে হারিয়েছি। আমার জীবনে হারানোর আর কিছু নেই। আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখলে প্রার্থী আমি হবোই। আমার হারানোর কিছু নেই। জীবনে মারা গেছি অনেকবার, এবার না হয় শেষ মরাটা মরবো।

করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের দু’বারের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত হোসেন নয়ন অন্যদের চেয়ে অপেক্ষাকৃত তরুণ হওয়ায় নতুন প্রজন্মের ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ করতে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান।

নয়ন আজকের বেলাকে বলেন, আমার নেতা জননেতা ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন মহোদয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন, দুইবারের মন্ত্রী ছিলেন। তাঁর সুযোগ্য পুত্র বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ভাইয়ের পাঠশালার সাথী, আমাদের বর্তমান সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমান রুহেলের হাতকে শক্তিশালী করতে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি। বৃহৎ পরিসরে মানুষের সেবাই হবে আমার মূল ব্রত।

মিরসরাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান এমরান উদ্দিন আজকের বেলাকে বলেন, আমার বড় ভাই মরহুম রিদোয়ান কবির থেকে শুরু করে আমরা সবাই দীর্ঘসময় ধরে এলাকায় সমাজকর্মের সাথে যুক্ত রয়েছি। সমাজ সেবা ছাড়া রাজনীতিতেও আমরা অনেক ভূমিকা রাখছি। আরো বৃহৎপরিসরে উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার মানুষের সেবা করতে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সেলিম, মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম সাইফুল্লাহ্ দিদার, আরেক যুগ্ম সম্পাদক এসএম আবুল হোসেন, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা খন্দকার শফিউল আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন মান্না তাদের প্রার্থীতার খবর জানিয়েছেন।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়াম্যান ইসমত আরা ফেন্সী, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা মহিলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম কলি ও মিরসরাই উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি বিবি কুলছুমা চম্পা নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা করে ইতোমধ্যে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন।

এসএস/এসআই
আওয়ামী লীগআজকের বেলাউপজেলা পরিষদ নির্বাচননির্বাচনমিরসরাই
Comments (০)
Add Comment