হাটহাজারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দন্দ্বে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ সিএফসি ও বিজয়ের অনুসারীরা। ভোটকেন্দ্র দখলকে কেন্দ্র করে এক পক্ষের অনুসারীরা অপর পক্ষের অনুসারীকে কুপিয়ে জখম করেছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভোটকেন্দ্র এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহত ছাত্রলীগকর্মীর নাম সালাহ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের একাংশের অনুসারী। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে চবি শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ চুজ ফ্রেন্ডস উইদ কেয়ার (সিএফসি) ও বিজয়ের কর্মীরা চবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে অবস্থান করছিল। এ সময় বিজয়ের কর্মীরা মোটরসাইকেল প্রতীক ও সিএফসির কর্মীরা ঘোড়া প্রতীকের পক্ষ হয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের অনুসারীরা দন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে এবং একপর্যায়ে বিজয়ের অনুসারী সালাহ উদ্দিনকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সিএফসির অনুসারীরা।
এদিকে এ ঘটনার পর পরেই দুই পক্ষের কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়য়ে পড়ে যা আলাওল হল, এএফ রহমান হল ও শহীদ আব্দুর রব হলে ছড়িয়ে পড়ে। দন্দ্বে জড়ানো বিজয়ের অনুসারীরা আলাওল হল ও এএফ রহমান হলে অবস্থান করে অপরদিকে সিএফসির অনুসারীরা শহীদ আব্দুর রব হলে অবস্থান করে।
জানা গেছে, ভোটকেন্দ্রের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজয়ের কর্মীরা আলাওল হল ও এএফ রহমান হল থেকে বের হয়ে শহীদ আব্দুর রব হলের দিকে গেকে বিকেল ৩টার দিকে আব্দুর হল এলাকায় উভয় পক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পালটা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষের অনুসারীদের রামদা ও লাঠিসোঁটাসহ নানা দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায়। ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় সিএফসির ৭-৮ জন কর্মী ও বিজয়ের ১ কর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডি দুপক্ষের কর্মীদের হলে ঢুকিয়ে দেয়।
বিজয়ের নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস বলেন, ভোটকেন্দ্র আমাদের হলের পাশে হওয়ায় ৩ জন কেন্দ্রের ওদিকে যায়। গিয়ে দেখে রব হলের ছেলেরা এসে কেন্দ্র দখল করার চেষ্টা করছে। এ সময় সালাহ উদ্দিন তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে এই নির্বাচনে ইনভলভ না হওয়ার জন্য বলে। এরপরই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
সিএফসির নেতা ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সোপান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা অধিকাংশই বাইরে থেকে এসেছে। তাই স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে গ্রুপের সিনিয়র বা নেতাদের কোনো নির্দেশনা নেই। আমি গতকালকেও সবাইকে নিষেধ করে দিয়েছি যাতে এসবে কেউ না জড়ায়। এরপরেও কেউ অতিউৎসাহী হয়ে কিছু করলে সে দায়ভার একান্তই তার। আমি প্রক্টরিয়াল বডিকে জানিয়েছি, যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম আজকের বেলাকে বলেন, ভোটকেন্দ্রে একটি ছেলেকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ নিয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা ডিসিপ্লিনারি কমিটির কাছে হস্তান্তর করব। সেখান থেকে বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।