পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। শনিবার (১৫ জুন) ফজরের নামাজের পর মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানের দিকে যাত্রা শুরু করেছেন হাজিরা।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ হজ করতে সৌদি আরবে সমবেত হয়েছেন। তাদের মুখে ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাতের ময়দান। পাপমোচনের আকুল বাসনায় মহান সৃষ্টকর্তা আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও মুক্তির প্রার্থনা করবেন তারা।
সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ জানিয়েছে, শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। এদিন সৌদি আরবের মিনায় অবস্থান করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। সেখানে নিজ নিজ তাঁবুতে ইবাদতে মশগুল ছিলেন তারা। আজ শনিবার ফজরের নামাজ আদায় করেই আরাফাতের ময়দানে রওনা হয়েছেন হজযাত্রীরা। তাদের মুখে সমবেত সুরে ধ্বনিত হচ্ছে,‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্নি’মাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাকা’ (অর্থাৎ আমি হাজির, হে আল্লাহ, আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার)।
আজকের দিনটিকে হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই দিনে আরাফাতের ময়দানে হাজিরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া এবং ক্ষমা ও পাপমোচনের জন্য কান্নাকাটি করেন। আরাফাতের ময়দানে খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন হাজিরা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান শেষে মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করবেন তারা। রাতে সেখানেই খোলা মাঠে অবস্থান করবেন। এরপর সেখান থেকে প্রতীকী শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করবেন হাজিরা।
রোববার মুজদালিফায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর মিনায় যাবেন হাজিরা। সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দক্ষ ট্রাফিক ও নিরাপত্তা পরিকল্পনার কারণে সহজেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন তারা।
মিনায় শয়তানের উদ্দেশে সাতটি পাথর মারা শেষে পশু কুরবানি দেবেন তারা। অধিকাংশ হাজি নিজে বা বিশ্বস্ত লোক দিয়ে পশুর হাট ও জবাই করার স্থানে (মুস্তাহালাকা) গিয়ে কোরবানি দেন। কেউ কেউ ব্যাংকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিয়েও কোরবানি দিয়ে থাকেন।
এবারের হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার ২২৫ জন (ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ) হাজি অংশ নিয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে সর্বমোট ২১৮টি ফ্লাইটে সৌদি আরব পৌঁছেছেন তারা।
হজযাত্রীদের স্বাস্থের কথা বিবেচনা করে ৩৪ হাজারের বেশি চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট ও প্রশাসনিক কর্মী নিয়োগ দিয়েছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া, তাদের সেবায় ১৮৯টি হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে। এমনকি মোবাইল ক্লিনিকে তাদের পরিবহনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭৩০টি অ্যাম্বুলেন্স ও সাতটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রী এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সেবা গ্রহণ করেছেন।