ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র কারণে উড়িষ্যায় কারও প্রাণহানি হয়নি। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে দুর্যোগ-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এমনটাই জানালেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি। সকাল সাড়ে ৭টায় ঘূর্ণিঝড়টির স্থলভাগে ঢোকার প্রক্রিয়া (ল্যান্ডফল) শেষ হয়। ল্যান্ডফলের এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রশাসনিক নজরদারি ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কারণে কারও মৃত্যু হয়নি। সরকারের লক্ষ্য ছিল, আমরা কাউকে মারা যেত দেবো না। আমরা কথা রাখতে পেরেছি।
মাঝি জানান, প্রস্তুতির অঙ্গ হিসাবে উড়িষ্যার উপকূলবর্তী জেলাগুলো থেকে অন্তত ৬ লাখ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ছয় লাখ মানুষের মধ্যে ছয় হাজার সন্তানসম্ভবা নারীও ছিলেন। তাদেরকে সবার আগে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া ১৬০০ জন প্রসূতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি রুখতে আগেই ৮ হাজার ৩২২টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রেখেছিল রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার মধ্যে দুর্গতদের অন্তত ৬ হাজার ৮টি সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় তার নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উড়িষ্যার ভিতরকণিকা ও ধামারার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। আবহাওয়া অফিস জানায়, রাত দেড়টার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রীয় অংশ স্থলভাগ অতিক্রম করা শুরু করে। সকাল সাড়ে ৭টার পরে ‘লেজের’ অংশও স্থলভাগে পুরোপুরি ঢুকে পড়ে।
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান হাবালিখাটি থেকে ৫০ কিলোমিটার উত্তর উত্তর-পশ্চিমে। পারাদীপের রাডার থেকে ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতির দিকে অনবরত নজর রাখা হচ্ছে। এর পর আরও শক্তি হারিয়ে ঘূর্ণিঝড় নিম্নচাপে পরিণত হবে। তার পর দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে বাঁক নিতে পারে। ‘দানা’র প্রভাবে ধামারা বন্দর সংলগ্ন গ্রামগুলিতে তো বটেই ভদ্রক এবং অন্য উপকূলবর্তী এলাকায় গাছ উপড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।