শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে জাতি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দখলদার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। বুদ্ধিজীবীদের হত্যার ঠিক দুই দিন পর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশেষ বাণী দিয়েছেন।

যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এদিন সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং যুদ্ধাহত ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই আজম বুধবার (১১ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় কমিটি ঘোষণা করেন।

এ সময়ে তিনি বলেন, বুদ্ধিজীবী দিবসের পবিত্রতা রক্ষায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার না করতে জনসাধারণকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। ওই দিন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে আলোচনা সভা হবে। মহান বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করছে।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও কর্মসূচি দিয়েছে। বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। দলটি ১৪ ডিসেম্বর ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের কার্যালয়গুলোতে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং সকাল ৯টায় মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে।

‘যথাযোগ্য মর্যাদায় ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালনের আহ্বান জানিয়ে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আলোচনা সভা, র‌্যালি ও দোয়ার মাধ্যমে ১৪ ডিসেম্বর ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ এবং ১৬ ডিসেম্বর ‘মহান বিজয় দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

জাতীয় জীবনে বুদ্ধিজীবী দিবস এবং মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে দেশকে মুক্ত করেছেন, আমি সেসব মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। নিহতদের পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে দলীয় কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন। ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা। তবে কখন কী কর্মসূচি পালিত হবে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়নি। দলটি সাংগঠনিক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছে।

যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

বিকল্প সড়কে যান চলাচলের নির্দেশনা

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে যানবাহনের সুষ্ঠু চলাচল নিশ্চিতে ভোর ৪টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন মিরপুর মাজার রোড (মাজার রোড ক্রসিং থেকে মিরপুর-১ নম্বর ক্রসিং পর্যন্ত) পরিহার করে বিকল্প সড়কে চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।

আজকের বেলাবুদ্ধিজীবী দিবস
Comments (০)
Add Comment