আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের নির্বাচনি ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গেছে। এটি কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। আর এই নির্বাচনি ট্রেন থামানোর ক্ষমতা এখন বিএনপির নেই।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে দলীয় প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি এবং প্রতিবাদে হরতাল ডেকেছে-এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, হরতাল এখন ভয়তাল হয়ে গেছে। এটা একটা মরচে ধরা হাতিয়ার।
বিএনপিসহ তাদের সমমনা দলগুলো নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে ট্রেন (নির্বাচনি ট্রেন) ছেড়ে গেল এই ট্রেন থামানোর ক্ষমতা তাদের নেই। তারা না উঠলে না আমরা কি করব? নির্বাচনি ট্রেন তো কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। নির্বাচনি ট্রেনে আপনি উঠবেন না? আপনি না উঠলে কি ট্রেন থেমে থাকবে? ট্রেনের যাত্রা কি থেমে থাকবে বলেও পাল্টা প্রশ্ন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এক তরফা নির্বাচন হতে যাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন নির্বাচনের নিয়ম অনুযায়ী হচ্ছে। ফলোয়িং আওয়ার কনস্টিটিউশন। নির্বাচন কমিশন এসপার কনসস্টিটিউশন নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আমাদের এর বিকল্প কী করার আছে?
সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে তিন পার্টির মহাসচিবকে চিঠি লিখেছেন। সেটির উপর আমি রিয়্যাকশন দিয়েছি। এখন দুটো বিষয় কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। এখন ইলেকশন সামনে। ইলেকশনের জন্য সংকট নিরসনে সংলাপ দরকার। একথা সিইসির বক্তব্যে নেই। আর এটা থাকারও কথা না। আর এই মুহূর্তে সংলাপ কখন করবেন? আপনি শিডিউল ডিক্লেয়ার করেছেন। শিডিউল ডিক্লেয়ারের পর কবে আমি বাংলাদেশের শতাধিক দলের সাথে সংলাপ করবো? কবে নির্বাচন করবো? কাজেই এই বক্তব্য আর ডোনাল্ড ল্যু’র বক্তব্য এক না।
তিনি আরও বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকে বিশ্বাসী এবং গণতান্ত্রিক চর্চায় সংলাপ অপরিহার্য বিষয়। সংলাপের বাস্তবতাকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। বাংলাদেশে আমরা সংলাপ করেছি। ২০১৮’র নির্বাচনে প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা তিনি বিস্ময়কর উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি ৭৩টা রাজনৈতিক দল, ইনক্লুডিং বিএনপি। বিএনপির সঙ্গে দুই বার তিনি সংলাপ করেছেন।
কাজেই আমরা সংলাপ করিনি তা নয়! এবার তো প্রেসিডেন্ট ডেকেছেন তারা আসেননি। নির্বাচন কমিশন ডেকেছেন তারা আসেন নাই। সংলাপের ব্যাপারে এক পক্ষ চাইলে তো হবে না সবাইকে চাইতে হবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এদিকে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে।
তফসিল অনুযায়ী, বাছাইয়ে বৈধ প্রার্থীরা ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। এরপর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৮ ডিসেম্বর। ওই দিন থেকেই প্রচার শুরু করা যাবে।যা চলবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রচার শুরুর ২০ দিন পর ৭ জানুয়ারি ভোট।