আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক দেখাতে এবং ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে তাদের দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী করেছে। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে বলে ঢাকায় আসা ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চার সদস্যের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ড. আবদুল মঈন খান। দলের স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদসহ বিএনপির সিনিয়র আরো দুই নেতা বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে উপস্থিত ইইউর ইলেকশন এক্সপার্ট টিমের সদস্যরা হলেন— ডেভিড নোয়েল ওয়ার্ড (ইলেকশন এক্সপার্ট), আলেকজান্ডার ম্যাটাস (ইলেকটোরাল এনালিস্ট), সুইবেস শার্লট (ইলেকটোরাল এনালিস্ট) এবং রেবেকা কক্স (লিগ্যাল এক্সপার্ট)। গত ২৯ নভেম্বর ঢাকায় পৌঁছায় ইইউর চার সদস্যের নির্বাচনি এক্সপার্ট টিমের এই চার সদস্য।
বিএনপি নেতারা জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ইইউ প্রতিনিধি দলকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অবহিত করে তারা বলেন, ভোটে অংশগ্রহণকারীরা আওয়ামী লীগের শরিক ও মিত্র দল। কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।
এছাড়াও গায়েবি মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ সারা দেশে হাজার-হাজার নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, পরিবারের সদস্যদের উপর নির্যাতন, গভীর রাত পর্যন্ত আদালতের কাজ চালু রেখে, বিরোধী দলের সাম্ভাব্য প্রার্থীসহ শতশত নেতাকর্মীদের ফরমায়েশি সাজা প্রদানের মতো দমন-পীড়নের মধ্যে একতরফা নির্বাচনী প্রহসনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় বলে বৈঠক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ভার্চূয়াল মিটিং হয়েছে। ইইউ প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিএনপির অবস্থান ও নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে অবস্থান জানিয়ে দিয়েছি।
মঈন খান বলেন, ৭ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে কেবল দেশের ভেতরে নয়, বরং সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মননশীল মানুষের সামনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যেভাবে একটি কলঙ্কময় ভাবচিত্র প্রতিস্থাপন করবে সে বিষয়ে বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। শুধু তাই নয় নির্বাচনে ডামি প্রাথী দিয়ে সরকার যেভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেখানোর ধান্ধা করছে সে বিষয়টি নিয়েও বিএনিপির খোলামেলা ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়েছে।
এর আগে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ কোনো পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে না বলে গত ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানায় ইউরোপের ২৭ দেশের এই জোট।