ঘূর্ণিঝড় রেমাল—মিরসরাইয়ে ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ও সিপিপির টিমের সমন্বয়ে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমাল-এর ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, উপকূলের ইউনিয়নগুলোতে ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় কাজ করছে। শনিবার (২৫ মে) রাত থেকে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে মাইকিং করে যাচ্ছে উপজেলা সিপিপির স্বেচ্ছাসেবকরা।

উপজেলা প্রশাসনসূত্র জানায়, দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক এর কাছ থেকে জরুরি ত্রাণের বরাদ্দ ইতোমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিসসহ সকল প্রস্তুতি গ্রহণ ও জরুরি প্রয়োজনে উপজেলার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর টিম প্রস্তুত রয়েছে।

সাহেরখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী আজকের বেলাকে বলেন, আমার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার রাত থেকে মাইকিং করা হচ্ছে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে যাওয়ার জন্য। এছাড়াও সাগরে যত মাছ ধরার ইঞ্জিনচালিত বোট ও নৌকা মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আগে থেকে তারা নিরাপদ স্থানে সরে এসেছে।

মিরসরাই উপজেলা সিপিপি টিম লিডার এম সাইফুল্লাহ দিদার আজকের বেলাকে বলেন, ১০ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভায় আমাদের ৮০ টিম মাঠে থাকবে। ৮০ টিমে ১ হাজার ৬শত স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। যারা নিজ নিজ ইউনিটে প্রচারণার কাজ শুরু করে দিয়েছে। একটি টিমে ১০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা সদস্য রয়েছে।

মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স ষ্টেশনের ষ্টেশন কর্মকর্তা ইমাম হোসেন পাটোয়ারী আজকের বেলাকে বলেন, প্রয়োজনীয় ইকুয়েপমেন্টসহ আমাদের ৩টি টিম গঠন করা হয়েছে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমাদের টিম সর্বদা প্রস্তুতি রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ভারি বৃষ্টি হলে পাকা বোরো ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। কৃষকদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দ্রæত ধান কেটে ফেলার। তবে ভারি বর্ষণ ও দমকা বাতাস না হলে ক্ষতির আশঙ্কা তেমন নেই।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন আজকের বেলাকে বলেন, উপকূলবাসীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ২১টি টিম প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫টি টিম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১৬টি টিম ১৬ ইউনিয়নে কাজ করবে। এছাড়া এ্যাম্বুলেন্স ও পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন আজকের বেলাকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছি। সব দপ্তরের কর্মকর্তা ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে সভা করে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে উপকূলীয় তিনটি ইউনিয়কে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ ধরা হয়েছে।

বিশেষ করে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের শ্রমিক, উপজেলার উপকূলীয় ইছাখালী, সাহেরখালী ও মঘাদিয়া ইউনিয়নে মাইকিং ও লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসে শুকনো খাবার, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের ব্যবস্থা রয়েছে।—যোগ করেন তিনি।

এসএস/এসআই
আজকের বেলামিরসরাইরেমাল
Comments (০)
Add Comment