অতিরিক্ত সময়ের শেষ ১৫ মিনিট আগে মাঠ ছাড়েন কিলিয়ান এমবাপ্পে। স্বভাবত টাই-ব্রেকার শুট নিতে পারবেন না। কিন্তু কে বলবে তিনি শেষ দিকে ফিট বোধ করছিলেন না। সতীর্থরা একেকটি গোল দিচ্ছেন, আর বুনো উল্লাসে মাতছিলেন ফরাসি সুপারস্টার।
এমবাপ্পেরর ফ্রান্স যখন হামবুর্গে উদযাপনে মত্ত তখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে জড়িয়ে শিশুর মতো কাঁদছিলেন বুড়ো পেপে। দুজনেরই যে শেষ ইউরো। দারুণ খেলে ফ্রান্সের সঙ্গে ১২০ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ ড্র রাখে পর্তুগাল। কিন্তু টাইব্রেকারে হারতে হয় ৫-৩ ব্যবধানে।
ফ্রান্সের ওসমান ডেম্বেলে ও পর্তুগালের রোনালদো প্রথম শটে গোল এনে দেন। দ্বিতীয়টিও ভুল হয়নি কারো। তৃতীয় শটে জোয়াও ফেলিক্স মিস করে বসেন। এটাই কাল হয় পর্তুগীজদের। অন্যদিকে ফ্রান্স প্রথম দুটির মতো পরের তিন শটই লক্ষ্যভেদ করে। ব্যবধান ২ গোল হয়ে যাওয়ায় শেষ শটটি আর নিতে হয়নি পর্তুগালকে।
১০ জুলাই রাত ১টায় সেমিফাইনালে স্পেনের মুখোমুখি হবে ফ্রান্স। এই নিয়ে ২০১৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৫টি বড় আসরের (বিশ্বকাপ-ইউরো) ৪টিতেই সেমিফাইনাল খেলে ফ্রান্স। ২০২০ সালের ইউরোতে বিদায় নিতে হয় শেষ ষোলো থেকে। এমন কীর্তি আর কোনো ইউরোপিয়ান দলের নেই।
পর্তুগাল ২০২২ বিশ্বকাপের পর এবার ইউরোতেও কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। অথচ ম্যাচজুড়ে দাপট ছিল তাদের। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল বেশ। ম্যাচের ৬০ শতাংশ সময় বল ছিল রোনালদোদের পায়ে।
শেষ মিনিটেও সুযোগ পেয়েছিল পর্তুগাল। নুনো মেন্ডেস মেরে দেন গোলরক্ষকের হাতে। রোনালদোও পেয়েছিলেন দারুণ সুযোগ। কিন্তু তার পায়ের ছোঁয়া পেয়ে বল চলে যায় বারের উপর দিয়ে। ফিনিশিংয়ের অভাবে ভুগতে হয় পর্তুগীজদের।
বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। এমবাপ্পেরা ২৫টি শট নেন। অন-টার্গেট ছিল ৫টি। অন্যদিকে ১৯টি শট নেওয়া পর্তুগালের অনটার্গেট শট ৪টি।
গ্রুপ পর্ব থেকে সেমিফাইনাল পর্যন্ত ৫টি ম্যাচ খেলে ফ্রান্স। পেনাল্টি ও টাইব্রেকার ছাড়া সরাসরি একটি গোলও করতে পারেনি দলটি। শেষ ষোলো ও গ্রুপপর্বের একটি ম্যাচ জেতে আত্মঘাতী গোলে। একটি ম্যাচ ড্র ও আরেকটি ম্যাচ এমবাপ্পের পেনাল্টি থেকে। আর আজ টাইব্রেকারে।
সেমিতে তাদের প্রতিপক্ষ স্পেন। ফাইনালের আগে দেখা যাবে আরেক ফাইনাল। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট জার্মানিকে বিদায় করে সেমিতে যায় স্পেন। এবার দেখা যাক ফ্রান্সের গোলের অপেক্ষা পুরায় কী না।