চট্টগ্রাম নগরের বাজারগুলোতে এক মাসে চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। খুচরায় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মোটা ও মাঝারি মানের চালের দাম। তবে সরু চালের দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে।
এছাড়াও বেড়েছে চিনির দাম। খোলা ও প্যাকেটজাত উভয় ধরনের চিনির দাম কেজিতে অন্তত ৫ টাকা বেড়েছে। এদিকে শাক-সবজির দাম কিছুটা কমেছে। শীতের নতুন শাক সবজি বাজারে আসায় আগের তুলনায় দাম কমতে শুরু করেছে।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) নগরের পাহাড়তলী, ওয়ারলেস ও কাজীর দেউড়ি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানায়, গত এক মাসের ব্যবধানে মোটা (স্বর্ণা ও ইরি) ও মাঝারি (বিআর ২৮) মানের চালের দাম খুচরা বাজারে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা এবং সরু (মিনিকেট ও নাজিরশাইল) চালের দাম খুচরায় ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। মিলমালিকেরা চালের দাম না বাড়ালেও খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে। তাই চালের বাজার তদারকি করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
বাজারে এখন মোটা চালের দাম পড়ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি, আর মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৯ থেকে ৬০ টাকায়। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি মানভেদে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নাজিরশাইল চালের বেশ কয়েকটি ধরন বাজারে পাওয়া যায়। দাম ৭৫ থেকে ৯৫ টাকা। তবে দাম বেশি হওয়ায় কম ও সীমিত আয়ের মানুষ সাধারণত এই চাল কম কিনে থাকেন।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এইচ আর খান পাঠান বলেন, মিলমালিকেরা চালের দাম না বাড়ালেও খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে। তাই চালের বাজার তদারকি করা প্রয়োজন। তবে এবার চালের উৎপাদন ভালো এবং নতুন চালও দ্রুত বাজারে আসবে। তাতে চালের দাম আর বাড়বে বলে মনে হয় না।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির সংকট আছে। সে কারণেই দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারের জন্য প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১৩০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় সরকারিভাবে নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু পাইকারি বাজারেই চিনি বিক্রি হচ্ছে সরকারি দামের চেয়ে বেশি।
খুচরায় এখন খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ছিল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। খুচরা বাজারে প্যাকেটজাত চিনিও ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে চিনির দাম এখনো বাড়ছে।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, তাঁরা মিলফটক থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ চিনি পাচ্ছেন না। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে চিনির সংকট আছে এবং সে কারণেই দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারের জন্য প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ১৩০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫ টাকায় সরকারিভাবে নির্ধারণ করা আছে। কিন্তু পাইকারি বাজারেই চিনি বিক্রি হচ্ছে সরকারি দামের চেয়ে বেশি।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, গতকাল পাইকারি বাজার থেকে তাঁরা প্রতি কেজি খোলা চিনি কিনেছেন ১৩৭ টাকায়। কেউ কেউ এর চেয়ে বেশি দামেও কিনেছেন বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে মোড়কে প্রতি কেজির দাম ১৩৫ টাকা লেখা থাকলেও পাইকারি বাজারে প্যাকেটজাত চিনি ১৩৭ থেকে ১৩৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো বলেন, পাইকারি বাজারে চিনির সরবরাহ কম, তাতে দাম বেড়েছে। তবে বড় কোনো সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই।
এদিকে বাজারে বেড়েছে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম। খুচরায় এখন খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা কেজি। এক সপ্তাহ আগে এই দাম ছিল ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। খুচরা বাজারে প্যাকেটজাত চিনিও ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে চিনির দাম এখনো বাড়ছে।
গত এক সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। আলুর দাম একটু কমে দাঁড়িয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। মাছ ও গরুর মাংসসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম উচ্চ মূল্যে স্থিতিশীল রয়েছে।
পাহাড়তলী বাজারের ক্রেতা বেসরকারি চাকরিজীবী আয়মন বলেন, কয়েকটি পণ্যের দাম একটু কমলেও খুব কমেছে, তা বলা যাবে না। কারণ, দাম যেখান থেকে উঠেছিল, সেই পর্যায়ে এখনো ফেরেনি।
এদিকে গত এক সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সবজির দাম কমেছে। বাজারে একেকটি ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাধা কপি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর নতুন আলু ১০০-১১০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, করলা ৪০-৬০ টাকা, সিম ৬০-৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মূলা ৪০-৫০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা, দেশি রসুন ১৮০ টাকা এবং ভারতীয় রসুন ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।