হঠাৎ করেই চট্টগ্রাম বন্দরে রাশিয়ার একটি নৌবহর এসেছে। গত ৫০ বছরে এই প্রথম কোনো রুশ যুদ্ধজাহাজ বাংলাদেশের বন্দরে এলো। রোববার (১২ নভেম্বর) ঢাকায় অবস্থিত রাশিয়ান দূতাবাস এক বার্তায় এসব তথ্য জানায়।
প্যাসিফিক ফ্লিট নামে এই নৌবহরে অ্যাডমিরাল ট্রাইবাটস ও অ্যাডমিরাল প্যান্টেলেভ নামে দুটি সাবমেরিন বিধ্বংসী যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। পেচেঙ্গা নামে একটি ট্যাঙ্কারও আছে এই বহরে।
রুশ দূতাবাস জানায়, রাশিয়ান প্যাসিফিক ফ্লিট স্কোয়াড্রন চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করছে, যা রাশিয়া-বাংলাদেশ সম্পর্কের জন্য একটি বিশাল মাইলফলক। ৫০ বছর আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের (বর্তমান রাশিয়া) নৌবাহিনীর জাহাজ শেষবার বাংলাদেশের বন্দর পরিদর্শন করেছিল।
রাশিয়ান দূতাবাস আরও জানায়, ৫ দশক আগে রুশ নৌবহর এসেছিল মূলত সদ্য স্বাধীন হওয়া একটি দেশকে মানবিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বন্দরে অনেক মাইন বসানো হয়েছিল। এ কারণে অনেক জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। সে সময় এই মাইন সমস্যা সমাধানে সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার অনেক দেশের কাছেই আবেদন জানিয়েছিল। কিছু দেশ সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু বিনিময়ে অনেক অর্থ দাবি করেছিল তারা; যা বাংলাদেশের ছিল না। তখন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) একমাত্র দেশ হিসেবে মানবিক কারণে সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছিল।
এরপর সমস্যা সমাধানে মাইন ক্লিয়ারিং অপারেশন নামে একটি অভিযান চালানো হয়। সোভিয়েত নৌবাহিনীর ৮ শতাধিক নাবিক ২৬ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চট্টগ্রাম বন্দরের মাইন অপসারণ করে; যা ১৯৭২ সালের এপ্রিলে শুরু হয়ে ১৯৭৪ সালের জুন পর্যন্ত চলে। সেই অভিযানে এক রুশ নৌডুবুরি মারা যান। তবে শেষ পর্যন্ত সোভিয়েত নৌসেনারা তাদের লক্ষ্য অর্জন করে এবং চট্টগ্রাম বন্দরে সারা বিশ্ব থেকে জাহাজ আসা-যাওয়ার পথ সুগম হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের মার্চে আসা সোভিয়েত নৌবাহিনীর প্রতিনিধি দলটি ভাইস অ্যাডমিরাল সের্গেই জুয়েঙ্কোর নেতৃত্বে ১ হাজার নাবিকের একটি বিশেষ টাস্কফোর্স মাইন অপসারণের কাজ শুরু করে। ওই অভিযানে অংশ নিয়েছিল দেশটির ২৪টি জাহাজ।