সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল ও কোটা আন্দোলনে জড়িতদের ওপর করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) দুপুর ১টায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল মালেকের কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীদের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
এর আগে বেলা ১১টায় নগরের ষোলশহর স্টেশনে সমবেত হয়ে একটি মিছিল নিয়ে ২নং গেইট, জিইসি, কাজীর দেউড়ি, লাভলেইন হয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পদযাত্রায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চবি অধিভুক্ত কলেজ, বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ, সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ দশ সদস্যের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করে।
সাক্ষাৎ শেষে চবি সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আজকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নিকট আমরা স্মারকলিপি প্রদান করেছি। তারা মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট আমাদের আহ্বানটি পৌঁছে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আশা করছি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে পড়ার টেবিলে ফেরাবেন।
স্মারকলিপি গ্রহণ শেষে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মালেক বলেন, শিক্ষার্থীরা রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের জন্য আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে এই স্মারকলিপি পৌঁছে দিব।
রাষ্ট্রপতি বরাবর দেওয়া স্মারকে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটা পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারবে। ছাত্র সমাজ দীর্ঘদিন যাবৎ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথে ঝড়-বৃষ্টি-খরতাপকে উপেক্ষা করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের কারণে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হোক আমরা তা কখনোই চাই না। আমরা দ্রুতই পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই।
ছাত্র সমাজ আশা রাখে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাতীয় সংসদে জরুরি অধিবেশন ডেকে সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। অন্যথায় ছাত্র সমাজ নিজেদের অধিকার আদায়, বৈষম্যমুক্ত ও মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ নির্মাণে সর্বাত্মক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য হবে।