বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জরুরি চিকিৎসার জন্য মুক্তি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক।
চিঠিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার তুর্ক বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তিকে ‘রাজনৈতিক সংলাপ ও সমঝোতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখা হবে। এমতাবস্থায় আমি আপনার সরকারের কাছে তার মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার জন্য আবেদন করছি। এতে খালেদা জিয়া দেশের বাইরে গিয়ে তার জরুরি এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা গ্রহণ করার সুযোগ পাবেন।’
গত ১ নভেম্বর ওই চিঠিটি পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে এএফপি। বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগে আক্রান্ত। গত মাসে তিন মার্কিন চিকিৎসক তার সার্জারি সম্পন্ন করেন। কিন্তু তার লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য জার্মানিতে নিয়ে যেতে পরিবারের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার।
গত ৯ আগস্ট থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি লিভার সিরোসিসসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার জন্য পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপি বেশ কিছুদিন রাজপথে আন্দোলনও করেছে। এমন অবস্থায় বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে তার যকৃতের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার কিডনি ও হৃদযন্ত্রের জটিলতা বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে তার যকৃতের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগে ভুগছেন। দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।