সরকার ছাত্র-জনতার ওপর ইতিহাসের নির্মম ও বর্বর হামলা এবং ‘গণহত্যা’ চালিয়ে গণশত্রুতে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘নির্লজ্জ সরকার যতই মিথ্যাচার ও সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার অব্যাহত রাখুক না কেন, কোনো কিছুতেই আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঠেকাতে পারবে না।’
বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আন্দোলন দমনে নির্বিচার হত্যা মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারযোগ্য অপরাধ। দিন যতই যাচ্ছে, সরকারের অস্তিত্বসংকট ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, গণবিচ্ছিন্ন সরকার আইন, সংবিধান, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি, মানবিকতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জনরোষ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সুবিধা ও ইচ্ছামাফিক যা ইচ্ছা তা-ই করছে। এসব করতে গিয়ে তারা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ছিন্নভিন্ন করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ও মানবিক চরিত্রকে গুম করেছে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বলপূর্বক বন্ধ করতেই সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বেআইনি কাজ করছেন, দিবালোকের মতো তা স্পষ্ট—এমন মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সন্ধ্যাকালীন কারফিউ চলাকালে এলাকা ভাগ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘ব্লক রেইড’ পরিচালনা করছে ও নির্বিচার ছাত্র গ্রেপ্তার করে অভিভাবক, তরুণ সমাজ এবং জনমনে ভীতি ও ত্রাসের সঞ্চার করছে। এসব করে কোনো লাভ হয়নি, বরং সরকারের কূটকৌশল উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা জনগণের সমর্থনে নতুন উদ্যমে আন্দোলন এগিয়ে নিচ্ছেন।
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ, গ্রেপ্তার-নির্যাতন করে বাধা দেওয়া হয়েছে। আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা জনগণের সমর্থনে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করে গণহত্যার বিচার ও গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেছে। শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচি পালনেও সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে বাধা প্রদান ও শিক্ষার্থীদের আটক করেছে। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আহত হয়েছেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে গুলি চালানোর প্রমাণ থাকার পরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার না করে অপরাধীকে খুঁজে বেড়ানো এবং ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বানকে উপহাস বলে উল্লেখ করেছেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা নির্বিচার গুলি করে শত শত ছাত্র-জনতার প্রাণ কেড়ে নিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে, এটা প্রমাণিত সত্য।