আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় মহাজোটের শরিকদের আসন বণ্টনের বিষয়টি নির্ধারিত হবে। জোট শরিকদের সঙ্গে আসন বণ্টন ও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়। এরপর মহাজোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচন জোটগতভাবে হবে, কাল (বুধবার) জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা করবে আওয়ামী লীগ। জোটের আসনবিন্যাস ও প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
আমির হোসেন আমু বলেন, গতকাল (সোমবার) জোট নেতাদের সঙ্গে আমাদের ১৪ দলের নেত্রীর একটি সভা হয়েছে। সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপট ও রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সভায় মহাজোটের আসন বণ্টনের বিষয়টিও উঠে এসেছে।
আওয়ামী লীগের এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, ১৪ দল একটি আদর্শিক জোট। অন্য দলের মতো আসনবিন্যাসের ওপর জোটের সম্পর্ক নির্ভর করে না। ১৪ দল আসন ভাগাভাগির জোট নয়। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী আছে। ১৭ তারিখের আগে জোট শরিকদের আসন ছাড়ের বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
আসন বিন্যাসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে নাগাদ হতে পারে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মহাজোটের এই মুখপাত্র বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে কাল (বুধবার) আলাপ হবে। আলাপ হওয়ার পর একটা পর্যায়ে যেতে পারে। ১৪ দলের মতামতে কোনো কনফ্লিক্ট হয় কি-না, সেটা দেখতে হবে।
তিনি বলেন, বিগত দিনে আমরা (১৪ দলীয় মহাজোট) একসঙ্গে নির্বাচন করেছি। আন্দোলনও একসঙ্গে করেছি। আমরা এখনো বলছি, জোটের নির্বাচন ও আন্দোলন হবে একসঙ্গে। ১৪ দল জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। সে সিদ্ধান্তে আমরা অটুট রয়েছি।
আমির হোসেন আমু বলেন, আসন বণ্টনের ব্যাপারে কোথায় কী করা যায়, কীভাবে আসন বিন্যাস করা যায়, যার যার মতামত যদি বলে, সে ব্যাপারেও আমরা আলোচনা করছি। আলোচনা করে আমরা নেত্রীকে জানাবো। আজ মেনন সাহেব, ইনু সাহেব এসেছেন, আলোচনা হয়েছে, আমি বুধবার সেই বিষয়গুলো নেত্রীকে জানাবো। আলাপ করার পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো।
মহাজোটের এ সমন্বয়কারী বলেন, এখন পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো সব চূড়ান্ত না। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগেরও শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছে। কার বিরুদ্ধে কে থাকবে, কার বিরুদ্ধে কে থাকবে না, কে প্রত্যাহার করবে, আর কে করবে না, এগুলো দ্রুত আলোচনা করা হবে।
অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন, একসঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ও যুদ্ধ করায় ১৪ দল অনেক পরীক্ষিত। এটা শুধু আসনবিন্যাসের ওপর নির্ভর করে না। আমার একটি রাজনৈতিক আদর্শিক জোট। এটা ভাগাভাগির জোট না। ২০০১ সাল থেকে আমরা যুদ্ধ করে আসছি। ২০০৬ সালে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু আসন বিন্যাসে কে পেল, কে পেল না, এটা বড় কথা নয়। আমরা একটি আদর্শিক জোট হিসেবে কাজ করছি।
বৈঠকে ১৪ দল নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।