শ্রীলঙ্কা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। দলটির দিকে তাকালে মনে হবে যেন কিছুই নেই। ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে নিজেদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করাবে- এমন ক্রিকেটার দলটির মধ্যে নাই বললেই চলে; কিন্তু তারাই কি না দলীয় পারফরম্যান্সে অন্যদের চেয়ে সেরা। নিজেদের নিংড়ে দিতে মোটেও কার্পণ্য করে না।
এ কারণে, এবারও এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে এসেছে লঙ্কানরা। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানকে হারিয়েছে তারা। এবার ফাইনালে তারা আরেক শক্তিশালী দল ভারতকে হারাতে চায়। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের হারিয়েই শিরোপা নিজেদের ক্যাবিনেটে রেখে দিতে চায় দাসুন শানাকার দল।
শ্রীলঙ্কার তুলনায় ভারতীয় দলটি তারকায় ঠাসা। বিশ্ব ক্রিকেটকে আকর্ষণ করার মত তারকার যেন অভাব নেই দলটিতে। দারুণ শক্তিশালী দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে যেভাবে ব্যাটিং করেছে এবং বল হাতে বোলাররা যে ক্যারিশমা দেখিয়েছে, তাতে নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা দলের তকমা তাদের দেয়াই যায়।
সে হিসেবে আজকের এশিয়া কাপের একচ্ছত্র ফেবারিট হিসেবে ভারতের নামই বলে দেয়া যেতো; কিন্তু দেয়া যাচ্ছে না- সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে ৬ রানের পরাজয়ের কারণে।
ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে বেশ কিছু পরিবর্তন এনে একাদশ সাজিয়েছিলো ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবুও তাদেরকে কোনো অংশেই কম শক্তিশালী বলার সুযোগ ছিল না। শুভমান গিল ১২১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা সত্ত্বেও ২৬৬ রান করতে পারেনি ভারত।
এই এক পরাজয়ই যেন সমস্ত মনোবল ভেঙে দিয়েছে ভারতীয়দের। যতই বাংলাদেশের কাছে পরাজয় ভুলে আজ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হতে চাইবে, ততই পরাজয়ের ধাক্কাটা ভেতর থেকে দুর্বল করে দিতে পারে রোহিত শর্মাদের। এই পরাজয়ের ক্ষত তারা কতটা কাটিয়ে উঠতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আবার সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সুখস্মৃতিকেও সঙ্গ করে নিতে পারে ভারতীয়রা। ২১৩ রান করেও ওই ম্যাচে ১৭২ রানে লঙ্কানদের অলআউট করে দিয়ে ৪১ রানের ব্যবধানে ম্যাচ জয় করে নিয়েছিলো রোহিত শর্মার দল।
র্যাংকিংয়ে ৮ নম্বর দল এখন শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপের জন্য তাদেরকে বাছাই পর্বও খেলতে হয়েছিলো। কিন্তু বাছাই পর্ব থেকে যে ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে লঙ্কানরা, তা অবিশ্বাস্য। ভারতের বিপক্ষে সুপার ফোরের ম্যাচে লঙ্কান স্পিনাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছিলো। ১০ উইকেটের সবগুলোই নিয়েছিলো লঙ্কান স্পিনাররা। তবে, ভারতীয় পেস ব্যাটারির সামনে লঙ্কান টপ অর্ডার ব্যর্থতার পরিচয় দিলে হারতে হয় তাদের। না হয়, ওইদিনও জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে পারতো।
আজকের ফাইনালের আগে নিশ্চয়ই লঙ্কানরা কাজ করবে- উইকেটে টপ অর্ডার ব্যাটারদের পা কিভাবে আরও শক্ত করা যায়। অন্যদিকে ভারতীয়রা কাজ করবে কিভাবে আরও কার্যকরভাবে লঙ্কান স্পিনারদের মোকাবেলা করা যায়।
যদিও ফাইনালের আগে দুই দলেরই দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিটকে গেছেন। ভারত হারিয়েছে তাদের স্পিন অলরাউন্ডার অক্ষর প্যাটেলকে। শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্পিনার মহেশ থিকসানাকে। এই দুই খেলোয়াড়কে ছাড়া নেমে ভারত এবং শ্রীলঙ্কা কী করতে পারে, সেটাই দেখার বিষয়।