‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’—আপামর বাংলার প্রবাদকে সত্যি প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। র্যাংকিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি প্রীতি ম্যাচই জিতেছেন সাবিনা খাতুনরা। প্রথম ম্যাচে ৩-০ আর আজ দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ৮-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বিপরীতে গোল হজম করেনি একটিও।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ ফুটবল দলের আজই শেষ ম্যাচ ছিল। বছরব্যাপী নানা ঘটনায় থাকা নারী ফুটবলের সমাপ্তিটা হয়েছে অসাধারণ। সফরকারী সিঙ্গাপুরের জালে দুই ম্যাচে ১১ বার বল পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। আজ সাত গোলের মধ্যে জোড়া গোল করেন তহুরা খাতুন ও ঋতুপর্ণা চাকমা। একটি করে গোল করেছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, সানজিদা আক্তার, বাংলাদেশি বংশোদ্ভত সুমায়া মাতসুমি ও জুনিয়র শামসুন্নাহার।
প্রথমার্ধেই বাংলাদেশ তিন গোলে এগিয়ে ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আরো পাঁচটি গোল করে স্বাগতিকরা। আজকের ৮ গোলের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল পঞ্চমটি। ফরোয়ার্ড ঋতুপর্ণা চাকমা ৬২ মিনিটে বক্সের মধ্যে বাঁ পায়ে অসাধারণ শটে বল জালে পাঠান। এর পাঁচ মিনিট আগে হওয়া গোলে অবদান ছিল ঋতুপর্ণার। বাম প্রান্ত থেকে ঋতুপর্ণা চাকমার মাইনাস তহুরা দৌড়ে গিয়ে পা ছোয়াতে ব্যর্থ হন। একই লাইনে পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা সানজিদা শট নিয়ে গোল করেন। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ম্যাচজুড়ে বেশ কয়েকটি গোল মিস করেন। পরে তিনি অবশ্য ৭৪ মিনিটে গোলের দেখা পেয়েছেন।
গত ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও হ্যাটট্রিকের আশা জাগিয়েও পারেননি তহুরা। ৭০ মিনিটে ঋতুপর্ণার পাসে তহুরা গোল করলেও অফ সাইডে বাতিল হয়। ৭৫ মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ হওয়ার পর বাংলাদেশের কোচ সাইফুল বারী টিটু বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন। গোলরক্ষক রুপ্না, ফরোয়ার্ড তহুরা, মারিয়া ও শামসুন্নাহারকে উঠিয়ে নেন। খেলোয়াড় বদল হলেও বাংলাদেশের গোল উৎসব থামেনি। ৮৬ মিনিটে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাপানি ফুটবলার সুমাইয়া মাতসুমি বাংলাদেশের হয়ে প্রথম গোল করেন। ইনজুরি সময়ে শামসুন্নাহার একটি গোল করলে স্কোরলাইন ৮-০ হয়।
প্রথম ম্যাচে জোড়া গোল করে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন। আজ দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথমার্ধেই জোড়া গোল করেন এই ফরোয়ার্ড। ১৬-১৮ মিনিটের মধ্যে বাংলাদেশ দুই গোল পায়। ১৬ মিনিটে সাবিনার ফ্রি কিক বক্সের মধ্যে আফিদার ভলিতে মাসুরা পারভীন হেড করেন। তহুরা আরেক হেডে বল জালে পাঠান। এক মিনিট পরেই অধিনায়ক সাবিনার নেওয়া কর্ণার সিঙ্গাপুরের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বল পোস্টের সামনে পড়ে। ফাঁকা দাঁড়িয়ে থাকা ঋতুপর্ণা চাকমা প্লেসিংয়ে ২-০ করেন। ২৪ মিনিটে বক্সের মধ্য থেকে সানজিদার শট সিঙ্গাপুরের গোলরক্ষক গ্রিপে নিতে পারেননি। সামনে থাকা তহুরা বল জালে পাঠান।
সিঙ্গাপুর ম্যাচজুড়ে তেমন আক্রমণ করতে পারেননি। প্রথমার্ধে ১৪ মিনিটে নুর সাওয়াজিনির শট রুপ্না ভালোমতোই সেভ করেন। দ্বিতীয়ার্ধে তেমন কিছুই করতে পারেনি সফরকারী দল। আজকের ম্যাচের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সিঙ্গাপুরের জার্মান লিগে খেলা ফুটবলার ডানেলে। সতীর্থরা তাকে সেভাবে বল যোগান দিতে পারেননি। পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিফেন্ডার আফিদা তাকে ভালোমতোই আটকে রাখতে সক্ষম ছিলেন।