বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে একজন ক্রিকেটারকে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠেছিল হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। ক্রিকেটপাড়ায় এ নিয়ে জোর আলোচনার পর জানা যায়, ওই ক্রিকেটারের নাম নাসুম আহমেদ।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কেউ এখনও মুখ খোলেননি। তবে এবার প্রশ্নের মুখে পড়লেন হাথুরু। জবাবে এই লঙ্কান কোচ দাবি করলেন, তাকে নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। এ ধরনের কাজ তার মতো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও দাবি করলেন তিনি।
সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের আগে মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) মিরপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন হাথুরু। বেশ হাসিমুখেই সংবাদ সম্মেলন শেষ করার পথেই ছিলেন তিনি। কিন্তু ‘নাসুমকে চড় মারা’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে তার মুখায়বব বদলে যায়। চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে তিনি বলেন, যারা আমাকে একটু হলেও জানে, তারা জানে এরকম কিছু করার মতো মানুষ আমি কিছুতেই নই।
হাথুরু দাবি করলেন বটে, কিন্তু একটি বেসরকারি টেলিভিশনে এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে সমর্থকদের মধ্যে। সংবাদ প্রকাশের বিষয়টি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করলেন হাথুরু, আপনাদের মিডিয়ার মান খুবই নিম্ন পর্যায়ের।
এরপর তাকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি কি নাসুমকে চড় মেরেছিলেন?’ জবাবে ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা হাথুরুর জবাব ছিল, ‘তুমি কি পাগল হয়েছো?’
এমনকি এরপর হাথুরুর মুখ থেকে ‘রাবিশ’, ‘বুলশিট’ ধরনের শব্দ অবিরাম ছুটতে থাকে। সেদিন আসলে কী ঘটেছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কী ঘটেছে আমি জানিই না! যারা সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিল, তাদের জিজ্ঞাসা করুন। বুলশিট।’
এদিকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তেমন আগ্রহী হলেন না বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস। তিনি বলেন, যেহেতু (বিশ্বকাপ ব্যর্থতার) একটি কমিটি তদন্ত শুরু করে দিয়েছে, তাই এখন কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। ও রকম কিছু (নাসুমকে চড় মারার ঘটনা) ঘটে থাকলে নিশ্চয়ই তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
জালাল ইউনুস বলেন, বিশ্বকাপের সময় কলকাতায় থাকার সময় এটা শুনেছিলাম। ওটা চড় ছিল নাকি ধাক্কা বা অন্য কিছু, তা আমরা স্পষ্ট জানতাম না। তা ছাড়া ওখানে দলের সঙ্গে টিম ডিরেক্টর এবং ম্যানেজারও ছিলেন। কিছু ঘটে থাকলে তাঁদের জানার কথা। নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর আরো দুই ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরও কেউ (দলের) কিন্তু কোনো অভিযোগ করেনি।
বিসিবির তদন্ত ছাড়াও আলাদাভাবে অনুসন্ধান করছে ক্রিকেটার্স ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)। অনেক বিষয়ে চুপ থাকা নিয়ে সমালোচনা হয় সংগঠনটির বিরুদ্ধে। তবে ক্রিকেটারকে ‘হেনস্থা’ করার বিষয়টি নিয়ে নিজেরা অনুসন্ধান করছেন বলে জানিয়েছেন কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল।