দলের সবচেয়ে বড় তারকা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ছিটকে গিয়েছিলেন লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগের সময়েই। সর্বশেষ লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন, দলকেও শিরোপা জিতেছিল। অথচ এই তারকা স্পিন অলরাউন্ডারকে ছাড়াই এশিয়া কাপে খেলতে নামতে হয় লঙ্কানদের।
শুধু হাসারাঙ্গা না, চোটের কারণে তিন পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা, দুষ্মন্ত চামিরা ও লাহিরু কুমারাকেও হারায় এবারের আসরের সহ-আয়োজক দেশটি। অথচ সেই দলটিই কিনা এখন ফাইনালে! বাঁচা-মরার ম্যাচে ফেভারিট পাকিস্তানকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় আসরের মতো ফাইনালে পৌঁছে গেছে লঙ্কানরা। নিজ দেশের মাটিতে বৃষ্টিবিঘ্নিত নাটকীয় এক ম্যাচে পাকিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটলো লঙ্কানরা।
৪৫ ওভারে ২৫৩ রান চেজ করতে নেমে শুরু থেকে ম্যাচের লাগাম নিজেদের কাছেই রেখেছে লঙ্কানরা। ইনজুরি আক্রান্ত পাকিস্তান যে বোলিং লাইনআপে কতখানি অসহায় তাই যেন দেখা গেল কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে। নাসিম শাহ-হারিস রউফকে হারিয়ে পাকিস্তান ছিল ব্যাকফুটে, ম্যাচেও খুব একটা ফেরা হয়নি তাদের।
শুরু থেকেও দারুণ অ্যাপ্রোচে ব্যাট চালিয়েছিলেন ওপেনার কুশাল পেরেরা। চারটি চার মেরেছেন শুরুতেই। যদিও ইনিংস বড় হয়নি শাদাব খানের দুর্দান্ত রানআউটের সুবাদে। দ্বিতীয় উইকেটে পাথুম নিশাঙ্কা আর কুশল মেন্ডিস যোগ করেছেন ৫৭ রান। পাথুম নিশাঙ্কাকেও প্যাভিলিয়নে ফিরিয়েছেন শাদাব। কট অ্যান্ড বোল্ডে থেমেছে ২৯ রানের ইনিংস।
রিজওয়ানের ব্যাটে বড় সংগ্রহ পাকিস্তানের
এরপরের গল্পটা পাকিস্তানের জন্য হতাশার। আর লঙ্কান ভক্তদের কাছে স্মরণীয় এক রাতের। সাদিরা সামারাবিক্রমা এবং কুশাল মেন্ডিস দুজন মিলে করেছেন ১০০ রানের জুটি। এখানেই কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান। তবে ভাগ্যটা খারাপ দুজনেরই। মাইলফলক থেকে হাতছোঁয়া দূরত্বে থামতে হলো তাদের।
সামারাবিক্রমা আউট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৪৮ রানে। আর মেন্ডিস ফিরেছেন ৯১ রানে। দুজনকেই সাজঘরে পাঠিয়েছেন ইফতিখার আহমেদ। তবে তাতে খুব একটা উপকার হয়নি। শুরু থেকেই লঙ্কানদের হাতেই ছিল ম্যাচ। শেষটাও হয়েছে অনায়াসে। মাঝে দাসুন শানাকা ফিরে গেলেও লঙ্কানদের জয় পেতে সমস্যা হয়নি। চারিথ আসালাঙ্কার ৪৯ রান স্বাগতিকদের নিয়ে যায় জয়ের বন্দরে।
এর আগে, টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৪২ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান সংগ্রহ করেছে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৮৬ রান করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
১৩০ রান তুলতেই টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটারকে হারিয়েছিল পাকিস্তান। এরপর সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিখার আহমেদ। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে গড়েন ১০৮ রানের জুটি।
৪০ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৭ রানে সাজঘরে ফিরেন ইফতিখার। তবে রিজওয়ান খেলেন শেষ বল পর্যন্ত। ৭৩ বলে ৮৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও ৬টি চার।
এর আগে ওপেনিংয়ে নেমে ৬৯ বলে ৫২ রান করেন আব্দুল্লাহ শফিক। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক বাবর। ৩৫ বলে ২৯ করেছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার হয়ে তিন উইকেট শিকার করেছেন মাথিশা পাথিরানা। তবে ৮ ওভারে ৬৫ রান খরচ করেছেন তিনি। প্রমোদ মাদুশানও ছিলেন খরুচে, ৭ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে নিয়েছেন দুটি উইকেট।
৪২ ওভার শেষে পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ২৫২। তবে বৃষ্টি আইনে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্যও ২৫২। শ্রীলঙ্কা সেটা পেরিয়েছে ম্যাচের শেষ বলে।