বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বমানের নির্বাচন সম্ভব নয় বলে ঢাকায় সফররত মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলকে জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানায় দলটি।
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, উপদেষ্টা ইসমাইল হোসেন জবিউল্লাহ, মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মারিয়া চিন আব্দুল্লা, মারিও মাইত্রি, জেমি ক্যানডেন্স সাক্স স্পাইকারম্যান, আকাশ সিসাসাই কুলোরি, ডেনিয়েল মাইকেল রেইলি ও জিওফ্রে পিটার ম্যাকডোনাল্ট।
পরে আমীর খসরু উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন সারা বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের মানুষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। এর আগে ইইউ এসেছিল, যুক্তরাষ্ট্রও একই উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে। কথা একটাই, আন্তজার্তিক মানের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।
আমীর খসরু বলেন, আমরা বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এখন বড় ভোট চুরি আরও পাকাপোক্ত হয়েছে।
এক দফা দাবিতে অটল আছি জানিয়ে খসরু বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি বিএনপির একার নয়, দেশের জনগণের। তত্ত্বাবধায়ক ও নিরপেক্ষ সরকারের মধ্যে ব্যবধান নেই।
বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না বলেই বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশ, জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠনের নজর বাংলাদেশে বলেও মন্তব্য করেন খসরু।
এর আগে গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল ঢাকায় পৌঁছে। প্রতিনিধিদলটি আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে গতকাল রোববার থেকে কাজ শুরু করেছে আমেরিকার প্রতিনিধিদলটি। গতকাল তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন। রাতে বৈঠক করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।
সোমবার সকালে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ওয়েস্টিন হোটেলে ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের বিভিন্ন কর্মকর্তারা।
বেলা ১২টায় বনানীর শেরাটন হোটেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে দলটি। আর বিকেল ৩টায় হোটেল ওয়েস্টিনে জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে।
প্রতিনিধিদলটির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি দূতাবাস ও হাইকমিশনগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা করার কথা রয়েছে। সফর শেষে প্রতিনিধিদলটি একটি বিবৃতিও দেবে। নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে তাদের যদি কোনো উদ্বেগ থাকে, তা জানাবে এবং বাস্তবসম্মত সুপারিশ থাকলে তা-ও উল্লেখ করবে বলে জানা গেছে।