সবারবেলায় সত্য বলি

চট্টগ্রাম শহরে সুপেয় পানির হাহাকার!

গরমের তীব্রতায় চৌচির হচ্ছে স্থলো ভূমি। শুকিয়ে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর তারি সঙ্গে বন্দরনগরী চট্টগ্রামজুড়ে বাড়ছে সুপেয় পানির হাহাকার। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী।

এদিকে গরমে পানির চাহিদা বাড়লেও তার জোগান দিতে পারছে না সেবাদানকারী সংস্থা চট্টগ্রাম ওয়াসা। খেতে হচ্ছে লবণপানি। কারণ কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ছাড়া হচ্ছে তেমন পানি। যা কর্ণফুলী ও হালদা নদী দিয়ে সাগরের পানি উজানের দিকে যেতে না পারায় লবণাক্ততা থেকে রক্ষা পায় এবং এ পানি পরিশোধন করে নগরবাসীর মধ্যে সরবরাহ করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। নেই তেমন বৃষ্টিপাতও।

এতে সাগরের পানি উজানে উঠে আসায় লবণাক্ত হয়ে পড়েছে নদীর পানি। যার ফলে ওয়াসা যে পানি সরবরাহ করছে সে পানিতে লবণাক্ততা থেকেই যাচ্ছে। এছাড়া নদীর পানিতে লবণাক্ততার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শ্যাওলা জন্মেছে।

সুপেয় পানির তীব্র সংকট নগরের পতেঙ্গা, ইপিজেড, হালিশহর ও পাহাড়তলিসহ বিভিন্ন এলাকার অবস্থা প্রকট আকার ধারণ করায় পানির জন্য কষ্ট পোহাতে হচ্ছে লাখো মানুষ।

খুলশী এলাকার বাসিন্দা গৃহিনী সাজিয়া আফরিন বলেন, পরিবারে রান্নার জন্য বাইরে থেকে পানি কিনতে হচ্ছে। ওয়াসার পাইপে গন্ধ আর লবণাক্ত পানি খাওয়া যাছেনা। আর ছড়াছে নানা অসুখ।

একদিকে যখন পানির জন্য হাহাকার, অন্যদিকে খোদ চট্টগ্রাম ওয়াসাই অপচয় করছে কোটি কোটি লিটার পানি। নগরীর কল্পলোক আবাসিকের সামনে পাইপলাইন ফুটো হয়েছে দীর্ঘ দেড় মাস ধরে। পানিতে সয়লাব পুরো এলাকা। অথচ খাওয়ার জন্য মিলছে না পানি। গোটা নগরজুড়ে এরকম অসংখ্য পাইপে ফুটো।

ওয়াসার সক্ষমতা প্রায় ৫০ কোটি লিটার। কিন্তু বর্তমানে ৪০ কোটি লিটারের বেশি পানি উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে নগরের অনেক এলাকায় লেগে আছে পানির সংকট। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সেসব এলাকার মানুষ। এ অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন এলাকায় রেশনিং করা হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।

চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না। ফলে সাগরের পানি উঠে আসছে উজানে। তবে বৃষ্টিপাত হলে এবং হ্রদে পানি বাড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। রিভার্স অসমোসিস প্রক্রিয়ায় পানি লবণমুক্ত করা যায়। যা খুব ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া। প্রতি লিটার পানি রিভার্স অসমোসিস করতে খরচ পড়ে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। সেদিকে না গিয়ে গভীর নলকূপ থেকে পাওয়া পানি কর্ণফুলীর পানির সঙ্গে ‘ব্লেন্ড’ করে লবণের মাত্রা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে রেখে সরবরাহ করা হচ্ছে।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ফুটো যতো বড় হবে ততোই বাড়বে বিল। এই পদ্ধতিতে একটি চক্র হাতিয়ে নেয় কোটি টাকা। যার প্রভাব সরাসরি পড়ে ভোক্তার ওপর।

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.