সবারবেলায় সত্য বলি

চট্টগ্রামের অধিকাংশ সড়কই বেহাল, চলাচলে ভোগান্তি

নগরের অক্সিজেন থেকে কুয়াইশ মোড় পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল। বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। কোথাও কোথাও পিচ ও পাথর উঠে গেছে। আবার কোথাও কোথাও কাদা জমে আছে।

এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে ভারী যানবাহন চলতে গিয়ে বিকল হচ্ছে। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। সড়কটি বেহাল হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লাখো মানুষজন।

সম্প্রতি বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের মতো নগরের বেশিরভাগ সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এসব সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর তালিকা প্রস্তুত করেছে। এতে বলা হয়, বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৬টি ওয়ার্ডের ৩২২টি সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ কোলোমিটার। এগুলো জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের মধ্যে রয়েছে নগরের মুরাদপুর থেকে অক্সিজেন সড়ক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই সড়কের মুরাদপুর, রেলবিট, বিবিরহাট, হামজারবাগ, সংগীত, আতুরার ডিপো, রউফৌবাদ, অক্সিজেনসহ একাধিক স্থানে খানাখন্দকে ভরপুর। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। চরম ঝুঁকি নিয়ে এই সড়কে যানবাহন চলাচল করছে। বৃষ্টি হলে এই সড়কে চলাচলকারী লোকজনের দুর্ভোগ বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

সংগীত আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মুরাদপুর-অক্সিজেন সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। গত দুই মাস ধরে সড়কটি সংস্কার করছে না সিটি করপোরেশন। এই সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায়।’

নগরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল সড়ক রাস্তার মাথা থেকে বহদ্দারহাট এবং বহদ্দারহাট থেকে ওয়াসা মোড় পর্যন্ত সড়কের অবস্থাও বেহাল। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তার ওপর বাউয়া স্কুলের সামনে নির্মাণ করা হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের র‌্যাম্প। এ কারণে ওই স্থানে ভঙ্গুর দশার সৃষ্টি হয়েছে।

একই অবস্থা সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ২ দশমিক তিন কিলোমিটার সড়কের। প্রতিদিন শত শত পণ্যবাহী ট্রাকসহ নানা যানবাহন চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। বেশিরভাগ অংশ অত্যন্ত খারাপ। বিটুমিন উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

নগরের মূল সড়কের মতো অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর অবস্থাও একই। এর মধ্যে সংগীত আবাসিকের সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় রয়ে গেছে। অল্প বৃষ্টিতে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। আবাসিক এলাকা হলেও এখানে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি কারখানা। রয়েছে একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালামাল রাখার ডিপো। সংস্কারকাজের ধীরগতির কারণে অবস্থা বেহাল বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন।

কবে নাগাদ এসব সড়ক সংস্কার হবে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে নগরের পূজামণ্ডপের আশপাশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামত করা হচ্ছে। এছাড়া নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে সম্প্রতি যেসব সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলোর তালিকা তৈরি করে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে অক্সিজেন মোড়, মিয়াখান নগর, পলোগ্রাউন্ড, এসএস খালেদ রোড, সিডিএ ২ নম্বর রোড, আগ্রাবাদ, হালিশহর জি ব্লক, এসি মসজিদ ও স্টিলমিল বাজার এলাকায় ভেঙে যাওয়া সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। বাকিগুলো দ্রুত সংস্কার হবে।’

সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিটুমিন সংকটের কারণে কিছু দিন সড়ক সংস্কার করতে সমস্যা হচ্ছে। বর্তমানে এই সমস্যা দূর হয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক সংস্কার করা সম্ভব হবে।’

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.