সবারবেলায় সত্য বলি

টেকনাফ সীমান্তজুড়ে গোলার শব্দ, সতর্ক বিজিবি

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত সারারাত গোলাগুলি হয়েছে। নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন সীমান্তের মানুষ। সকাল থেকে গুলির শব্দ কিছুটা কমলেও আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।

এদিকে নিরাপত্তার কারণে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদেরও চলাচল বন্ধ রেখেছে বিজিবি।

টেকনাফ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আজও সীমান্তের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেটি মিয়ানমারের অনেক ভেতরে। তবে নতুন করে যাতে কেউ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। সীমান্তে গোলাগুলিতে নিরাপত্তার কারণে নাফ নদের শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে মানুষ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকাল (রোববার) পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপসহ কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশকালে ১৬৫ জন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া সীমান্তে ঘোরাঘুরি করতে নিষেধ করা হয়েছে।’

শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকদের চলাচল বন্ধ রেখেছে বিজিবিশাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের টোল আদায়কারী সিদ্দিক আহমদ বলেন, ‘নাফ নদের বুকে জেটিঘাটে ভ্রমণে প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা ছিল। কিন্তু সীমান্তের গোলাগুলি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার কারণে এই জেটিতে দুই দিন ধরে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছে। কিছুদিন আগেও টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ ছিল। আমরা যারা সীমান্তের বাসিন্দা রয়েছি, তাদের ওপর ওপারের গোলাগুলির ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।’

টেকনাফের হ্নীলার বাসিন্দা মো. সাইফুল বলেন, ‘আমার এলাকায় রাতে অনেক ভারী গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে গোলার শব্দ কমেছে। কিন্তু থেমে থেমে গোলার শব্দ পাচ্ছে সীমান্তের লোকজন। ফলে মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কমেনি।’

এদিকে মিয়ানমারের রাখাইনে জান্তা বাহিনী এবং সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধে রাখাইনের মংডু শহরের বাঘগোনা, হাদিবিল, নলবনিয়া নয়াপাড়া গ্রামে হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এ জন্য কয়েকদিন ধরে এসব এলাকার প্রায় চার হাজার লোক বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্তবর্তী সিকদারপাড়া ও মন্নিপাড়া গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা সুযোগ বুঝে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলে জানা গেছে।

টেকনাফের জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা হাসমত উল্লাহ বলেন, ‘মংডু শহরের এতিল্লাপাড়ায় বসবাসরত চাচাতো ভাই আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। মিয়ানমার জান্তা সরকার তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে বলেছে।’

টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ ৯নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, রাতে বন্ধ থাকলেও সকাল থেকে আবারও তার সীমান্তে ভারী গোলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা বিজিবির সহায়তায় সীমান্তের লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া অযথা সীমান্তে ঘোরাঘুরি না করতে বারণ করছি।

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.