চট্টগ্রাম মহানগরী ও ফেনীর বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ছয় কিশোর গ্যাং গ্রুপের প্রধানসহ ২৮ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতভর অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নূরুল আবছার জানান, ফেনী পৌরসভার মধ্যম রামপুর এলাকা থেকে কিশোর গ্যাং গ্রুপ ‘এসডিকে’ গ্রুপের প্রধান রাব্বি (২০), তৌহিদুল সাগর (১৭), ফখরুলকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, এছাড়া চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকা থেকে ‘নুরু গ্রুপের’ সদস্য মোঃ রাকিব উদ্দিন তামিম (১৯), আহাদ আলীফ (১৯), গোপাল ত্রিপুরা (২২), আবরার হান্নান (১৯), মোহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (২০), সুব্রত বড়ুয়াসহ (২১) মোট ছয় জনকে ধরা হয়। একই থানাধীন আমিন কলোনি এলাকা থেকে রশিদ গ্রুপের প্রধান হারুনুর রশিদকে (২১) গ্রেফতার করা হয়।
একই থানাধীন আকবর টিলা পূর্বাঞ্চল হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে রুবেল গ্রুপের প্রধান রবিউল আওয়াল রুবেল (২৩), মুন্না (২২), মেহেদী হাসান মুন্না (২০), মনির (২০), ফারহাদ (২৪), আসিফ (২২), রাশেদ ওরফে রাসেলসহ (২০) মোট সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়।
বাকলিয়া থানাধীন এক্সেস রোড এলাকা থেকে ইউসুফ গ্রুপের প্রধান ইউসুফ (২১), এমরান হোসেন বাবলু (২৩), জামাল উদ্দিন (৩৮), সাখাওয়াত হোসেন শাকিল (২৪), মনির উদ্দিনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়। পাহাড়তলী থানাধীন সাগরিকা মোড় এলাকা থেকে সাদ্দাম গ্রুপের প্রধান রকিবুল হোসেন সাদ্দাম (২৬), সাব্বির হোসেন (২০), আলা উদ্দিন (২০), মাসুদুর রহমান অপু (২৬), রায়হান (২২) ও জাকির হোসেনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কিশোর গ্যাং কালচার সারা দেশে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন ছত্রছায়ায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে কিশোররা ব্যবহৃত হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও নাশকতা থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডের মতো বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিশোররা। গত এক বছরে র্যাব চট্টগ্রামের অভিযানে অসংখ্য কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছে, গ্রেফতাররা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা সাধারণত চট্টগ্রাম মহানগরী এবং ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়ভাবে রাস্তায় সংঘবদ্ধ হয়ে মারামারি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও ইভটিজিং, প্রভাব বিস্তার করাসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত। এ ছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে স্থানীয় এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, নিজেদের মধ্যে মারামারি, অন্য সাধারণ কিশোরদের মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন এবং মাদক সেবন করে বলে জানায়।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরও জানায়, অধিকাংশ কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার পেছনে স্থানীয় এলাকার একটি চক্রের মদত রয়েছে। মূলত ‘হিরোইজম ও বড় ভাই কালচার’ প্রকাশ করতে পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ইউসুফ, এমরান হোসেন বাবলু, রকিবুল হোসেন সাদ্দাম, আলা উদ্দিন, রায়হান ও জাকির হোসেনদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া, আকবারশাহ, চান্দগাঁও ও পাহাড়তলী থানায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও নাশকতা সংক্রান্ত আটটি মামালার তথ্য পাওয়া গেছে।