সবারবেলায় সত্য বলি

মিতুর টাকায় তাকে খুন করান বাবুল আক্তার

‘পরকীয়ার জেরে’ সাবেক এসপি বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতুকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছে। এছাড়া মিতুর হত্যায় ব্যবহারের জন্য এক আসামিকে ৭০ হাজার টাকায় বাবুল আক্তার একটি অস্ত্র কিনে দেন।

আদালতে দেওয়া সাক্ষ্য এসব কথা বলেছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ। আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যের একপর্যায়ে তিনি বলেন, ১৫ দিন আগে বাবুল আক্তারের মা টেলিফোন করে বলেছে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। তাকে যেন আমি মাফ করে দিই।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মেয়ে মিতুর মৃত্যুর ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে কয়েকবার কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহেদা মোশাররফ।

শাহেদা বলেন, শুরু থেকেই বাবুল-মিতুর দাম্পত্য সম্পর্ক ‘ভালো ছিল’ না। বাবুলের ‘পরকীয়ার’ ঘটনা জানার পর তা মা-বোনকে জানিয়েছিলেন মিতু। এরপর মিতুকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন বাবুল। তাতে অতিষ্ঠ হয়ে মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিদেশে অবস্থানকালে সেখানে বসেই মিতু হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বাবুল আক্তার।

সাক্ষ্য শেষে দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত জেরা চলে। শাহেদা মোশাররফের জেরা অসমাপ্ত রেখেই দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। বুধবার আবার তাকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

‘শুরু থেকেই সম্পর্ক ভালো ছিল না’
সাক্ষ্যে মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ বলেন, আমার বড় মেয়ে মাহমুদা খানম মিতু। বাবুল আক্তারের সাথে ২০০২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বাবুল আইডিয়াল স্কুলে চাকরি করত। বিবাহের পরে শুরু থেকে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। মোটামুটি ছিল।

‘তারপর সে পুলিশে জয়েন করে। পরে এডিশনাল এসপি হিসেবে কক্সবাজারে বদলি হয়। সেখানে বিদেশি এক মহিলার সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে।’

শাহেদা মোশাররফ বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। এর পাশের রুমে একই হোটেলে ওই বিদেশি নারীও ওঠে। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে।

“মিতু দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘এখানে কী করো?’ বাবুল বলে, বিদেশে যাবার জন্য ল্যাপটপে কাজ করে। দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগে। মিতু কিছুক্ষণ ওই রুমে ছিল। বাচ্চারা মিতুর রুমে একা থাকায় পরবর্তীতে সেখান থেকে চলে আসে। বাচ্চাদের ঘুম পাড়ানোর সাথে সাথে সেও ঘুমিয়ে পড়ে।”

আনুমানিক রাত ৩টার সময় মিতুর ঘুম ভাঙলে বাবুলকে কক্ষে দেখতে না পেয়ে আবার ওই বিদেশি নারীর কক্ষে মিতু যায় দাবি করে শাহেদা মোশাররফ বলেন, গিয়ে দেখে ওই নারী এবং বাবুল আক্তার আপত্তিকর অবস্থায় আছে। মিতু নিজের রুমে ফিরে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি বলি, ‘বাবুল আক্তারের কাছ থেকে তুই চলে আয়।’

মিতু তখন বলে, ‘আমার মাহির আর টাপুর (ছেলে ও মেয়ে) আমাকে খারাপ মনে করবে। আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করি।’

শাহেদা মোশাররফ বলেন, পরে বাবুল আক্তারের চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনে পোস্টিং হয়। তখন বাসায় বাবুল ও মিতু আলাদা আলাদা রুমে থাকত। বাবুল আক্তার গভীর রাতে অনেক মেয়েদের সাথে ফোনে কথা বলত। মিতু আড়ি পেতে শুনত।’

তিন-চারবার ‘আত্মহত্যার চেষ্টা’ মিতুর
বাবুল ২০১৪ সালে মিশনে যাবার সময় একটি মোবাইল ফোন চট্টগ্রামের নিজ বাসায় রেখে যায় জানিয়ে সাক্ষ্যে শাহেদা মোশাররফ বলেন, ওই মোবাইলে বাবুল আক্তারকে দেওয়া ওই বিদেশি নারীর ২৯টি এসএমএস পায় মিতু। বাসায় বাবুল আক্তারকে ওই নারীর উপহার দেওয়া দুটি ইংরেজিতে লেখা বই পায় মিতু।

‘এই এসএমএসগুলো মিতু মোবাইল থেকে দুটি বড় পৃষ্ঠা ও দুটি ছোট পৃষ্ঠায় লিখে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের শেষে আমার ছোট মেয়ে শায়লা মোশাররফের বাসায় মিতু ও তার সন্তানরা যায়। ওই সময় মিতু কাগজে লেখা এসএমএস ও বই আমাদের দিয়ে আসে। ওই বিদেশি নাগরিক নারীর সাথে সম্পর্কের বিষয়টি আমাদের বলায় বাবুল মিতুর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে।’

শাহেদা মোশাররফ বলেন, এরপর মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে। মিতু একবার চট্টগ্রামের বাসা থেকে পালিয়ে ঢাকায় আমাদের বাসায় যাবার চেষ্টা করে। ২০১৬ সালের জুনের ৪ তারিখ রাতে মিতু আমাকে ফোন দেয়…এটুকু বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহেদা মোশাররফ।

এরপর নিজেকে সামলে নেওয়ার চেষ্টা করে তিনি বলেন, মিতু আমাকে ফোন দিয়ে বলে, আম্মা মাহিরের স্কুল থেকে মেসেজ এসেছে। আমাকে খুব ভোরে মাহিরকে নিয়ে স্কুলে চলে যেতে হবে। ৫ জুন সকালে মিতুর বাসার পাশ থেকে একজন ভাড়াটিয়া মহিলা আমাকে ফোন দিয়ে বলে, ‘মিতু ভাবি সিলিন্ডার ব্লাস্ট হয়ে এক্সিডেন্ট করেছে’।

এ কথা বলেই শাহেদা কান্না করতে থাকেন। পরে বিচারক তাকে চেয়ারে বসে সাক্ষ্য দিতে বললে তিনি বসে বলতে শুরু করেন।

শাহেদা বলেন, তখন আমি ওই মহিলাকে বলি, ‘মা তুমি মিতুকে হাসপাতালে ভর্তি করাও। যত টাকা লাগে, টাকা নিয়ে আমি আসতেছি।

কিছুক্ষণ পর মাহির ফোন করে বলে, ‘নানি আম্মুকে সন্ত্রাসীরা কোপাইছে এবং গুলি করেছে’। আমি মাহিরকে বলি, ‘তোমার আম্মু কি কথা বলে?’ মাহির বলে, ‘না, আম্মু তাকিয়ে আছে শুধু’। তারপর আমি মাহিরকে বলি, তোমার বাবাকে ফোন দিয়েছ?’ মাহির বলে, ‘হ্যাঁ নানি, বাবা কথা বলে না’। ফোনে মাহিরকে বলেছিলাম, ‘তোমার আম্মুকে চাদর দিয়ে ঢেকে রাখ।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, মিতু মারা যাওয়ার পর মাহির বাবুল আক্তারকে তিনবার কল দিয়েছে। কিন্তু বাবুল রিসিভ করলেও কোনো কথা বলেনি। এবং আমিও বাবুলকে একবার ফোন দিয়েছিলাম। রিসিভ করেনি।

‘তারপর আমি আমার ছোট দুই দেবর শহীদুল ও শওকত, জা লাভলি বেগম ও ছোট মেয়ে শায়লা মোশাররফকে নিয়ে ফ্লাইটে চট্টগ্রামে চলে আসি। এসে মিতুকে যেখানে খুন করা হয়েছে, সেখানে যাই। তারপর মিতুর বাসায় যাই। শুনতে পাই, মিতুকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।’

এরপর শাহেদা বলেন, বাসায় যাওয়ার পর মাহির আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে বলে, নানি আমার মা চলে গেছে…একথা বলেই শাহেদা মোশাররফ আদালতে চিৎকার করে কেঁদে ওঠেন।

পরে শাহেদা বলেন, তারপর মিতুকে হাসপাতাল থেকে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসে। জানাজা হবে। পুলিশ লাইনে জানাজা হবার পর মিতুকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আমার দুই দেবর শহীদুল ও শওকত ঢাকায় নিয়ে যায়। আমরা বিমানে ঢাকা যাই। তারপর মেরাদিয়ায় মিতুর জানাজা হয়। সেখানে দাফন হয়।

‘মিতুর ব্যবসার টাকায় মিতুকে খুন’
শাহেদা মোশাররফ আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে থাকার সময় তিন-চারবার দেশে আসে। কিন্তু তখন একবারও বাসায় আসেনি। তখন থেকে মিতুকে মারার পরিকল্পনা করে এবং টাকা লেনদেন করে। মিশন থেকে এসে সে চায়না যায় টিম নিয়ে। চায়নাতে বসেও মিতুকে মারার চেষ্টা করেছে। পরিকল্পনা করে।

‘মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়ে মিতুকে খুন করে। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয় মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে খুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।’

এরপর ২০১৬ সালের ২৪ জুন বাবুল আক্তারকে তাদের বাসা থেকে ঢাকার ডিবিতে নিয়ে যাওয়া হয় জানিয়ে শাহেদা মোশাররফ বলেন, তারপর বাবুল আক্তার ওইখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। তারপর আমি জিজ্ঞেস করি, ‘চাকরি ছাড়লে কেন?’ তখন সে বলে, ‘মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়া লাগছে’। আমি তাকে বলি, ‘এ কোন বিচার! তোমার চাকরি ছাড়া কি মিতুর খুনের বিচার?’

শাহেদা বলেন, এর আগে বাবুল আক্তার মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে মুছাকে অস্ত্র কিনে দেয় মিতুকে মারার জন্য। এ কথা বলেছে মুছার স্ত্রী। মুছার স্ত্রী মুছাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তুমি মিতুকে খুন করেছ?’ তখন মুছা বলেছে, ‘আমি যদি মিতুকে খুন না করি, বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে।’

বাবুল আক্তার আমাদের বলে, ‘মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি’। তখন আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার ধরা পড়ে। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। সে আদালতে জবানবন্দি দেয় যে, বাবুল আক্তারের নির্দেশে মুছা মিতুকে খুন করেছে।’

শাহেদা মোশাররফ বলেন, মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল, ওখানে মিলাদ পড়াতে আমরা আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেপ্তার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে- পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, বাবুল আক্তার পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মিতুকে খুন করিয়েছে। বাবুল আক্তার মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাড়াহুড়ো করে নিজেই কেস করে।

পরে আইও বলেছে, আমরা বাবুল আক্তারের মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিব। আপনি কেস করবেন, না আমরা কেস করব? তখন মিতুর বাবা বলে, ‘আমার মেয়ে, আমি কেস করব’। ২০২১ সালের ১২ মে আমার স্বামী বাবুল আক্তারসহ আটজনের নামে মামলা করল।’

সাক্ষ্যের শেষ দিকে আদালতের উদ্দেশ্যে কান্না করতে করতে শাহেদা বলেন, মিতুর সন্তানদের কোথায় রাখছে? মাহিরকে আটকে রেখেছে। একবার আমার বাসায় এসেছিল। গোসল করাতে নিলে দেখি পিঠে দাগ। মাহির বলেছে, ‘দরজায় ধাক্কা খেয়েছে’। দরজায় ওভাবে পিঠে লাগতে পারে না।

‘আমার মাহিরকে মারে। আমি মাহিরদের ভিক্ষা চাই। ভিক্ষা করে হলেও আমি ওদের খাওয়াব। তবু সৎ মায়ের কাছে পালতে দিব না।’

সবশেষে শাহেদা আদালতের উদ্দেশ্যে বলেন, বাবুল আক্তারের মা ১৫ দিন আগে আমাকে ফোন করে বলেছে, ‘মিতুকে আমার ছেলে খুন করেছে। মাফ করে দেন বাবুলকে।’

‘আমি তখন রাগ করে বলেছি, কেন বাবুল কি মরেছে? বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? জীবনেও তাকে মাফ করব না। মিতু আমার বড় সন্তান। প্রথম মা ডাক শুনেছি আমি মিতুর মুখে। বিচার করুন।’

জেরা অসমাপ্ত
আসামি ভোলার পক্ষে জেরায় তার আইনজীবী নিত্যলাল খাস্তগীর প্রশ্ন করেন, ভোলা কখন ধরা পড়েছে? ভোলা যে ধরা পড়েছে সেটা আপনার স্বামী যে মামলা করেছেন সেটার আগে না পড়ে শুনেছেন?

জবাবে শাহেদা বলেন, আগে ধরা পড়েছে। তবে কখন সেটা বলতে পারব না। বাবুল আক্তারের কাছে শুনেছি। টিভিতে দেখেছি। তবে কখন, সেসব খেয়াল নেই।

আইনজীবী নিত্যলাল খাস্তগীর প্রশ্ন করেন, বাবুল আক্তারের নির্দেশে মুছা মিতুকে খুন করেছে। এটা কখন শুনেছেন? জবাবে শাহেদা বলেন, টিভি সাক্ষাৎকারে শুনেছি।

পরে বাবুলের আইনজীবী কফিল উদ্দিন জেরায় প্রশ্ন করেন, বিবাহের পর তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল না, ২২ বছরে কোনো অভিযোগ কোথায় দিয়েছেন? জবাবে শাহেদা মোশাররফ বলেন, না। তবে বাবুলের মা-বাবাকে জানিয়েছি।

মিতু খুনের পর চট্টগ্রামে এলে তখন অনেক পত্রিকা তাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিল উল্লেখ করে আইনজীবী কফিল বলেন, তখন আপনি বলেছেন ১৪ বছরে বাবুলের ঘরে কোনো অশান্তি হয়নি। জবাবে শাহেদা মোশাররফ বলেন, ‘সত্য না।’

২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর মামলার সেসময়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান ঢাকায় তাদের বাসায় গিয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল, তখন বাবুলের বিষয়ে কিছু বলেছিলেন কি-না, আইনজীবী কফিল উদ্দিনের এমন প্রশ্নের উত্তরে শাহেদা বলেন, সত্য নয়। আমার ছোট মেয়েকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বাবুলে বিষয়ে কিছু বলেছি কি না, মনে নেই। তখন সবাই ঘরে ছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

মিতুর স্বামী পুলিশের চাকরিচ্যুত এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। শুরুতে জঙ্গিদের দিকে আঙুল তোলা হলেও পরে কাহিনীতে আসে নাটকীয়তা।

সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই। একপর্যায়ে মামলার বাদী থেকে এক পর্যায়ে আসামিতে পরিণত হন বাবুল। চাকরিও হারান তিনি।

২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। আর এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ তিনি।

বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়।

২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। এরপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত।

আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.