মিরসরাইয়ে মৎস্যজোন খ্যাত মুহুরী প্রজেক্ট মৎস্য ঘের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের সিডিএসপি বাঁধ ও সুপারডাইক এলাকার বেশ কিছু মৎস্য ঘেরের বাঁধ কেটে দেয় বেজা কর্তৃপক্ষ।
এতে স্থানীয় মাছ চাষীদের কয়েক কোটি টাকার মাছ পাশের সাগরে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে বেজা কর্মকর্তারা বলছেন, এখানে সরকারি জমির দখল করে মাছের ঘের তৈরি করা হয়েছে। আগে তাদের সরে যেতে বলা হলেও তারা বেজার নির্দেশনার তোয়াক্কা করেনি।
অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকার জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এখানে বেশ কিছু মাছের ঘেরের পাড় কেটে দিয়েছে বেজা কর্তৃপক্ষ। এ সময় মাছ চাষী আজমল হোসেন ও নুরুল আবছারের সঙ্গে কথা হয় আজকের বেলার। তারা জানান, তারা ২০ বছরেরও অধিক সময় এখানে মাছ চাষ করছেন। বেজা কর্তৃপক্ষ কোনোরকম পূর্বঘোষণা ছাড়া হঠাৎ মাছভর্তি ঘেরের পাড় কেটে দেয়। এতে তাদের কয়েক কোটি টাকার মাছ ও মাছের পোনা সাগরে পতিত হয়েছে।
মাছ চাষী আজমল হোসেন আজকের বেলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মিঠাপানির মাছ চাষে আমাদের উদ্বুদ্ধ করছেন। অথচ এখানে কোটি কোটি টাকার মাছের ঘের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আমাদের দাবি— মুহুরী প্রজেক্ট মৎস্য ঘের এলাকাকে মৎস্য জোন ঘোষণা করে এটিকে রক্ষা করা হোক। কারণ এখানে চট্টগ্রামের মৎস্য খাদ্য চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ মাছ উৎপাদন হয়।
মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহফুজা জেরিন আজকের বেলাকে বলেন, সরকারি জমিতে অবৈধভাবে মাছের ঘের তৈরি করায় বেজা অভিযান চালিয়েছে। এ সময় ১৫টি অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ করা হয়।
বেজার উপ-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. ইয়াছিন আজকের বেলাকে বলেন, সরকারি জমিতে তারা অবৈধভাবে মাছের ঘের তৈরি করেছে। ঘের মালিকদের গত বছরের ডিসেম্বর থেকে মাছ সরিয়ে নিতে সময় দেওয়া হয়েছিল। তারা বেজার নির্দেশের কর্ণপাত করেনি। মঙ্গলবার আমরা বেজার আওতাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রথম দিন ১৫টি অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গত, মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় প্রায় দশ হাজার একর মাছের ঘেরে বছরে ৪৯ হাজার মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। সরকারের মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ এলাকায় চট্টগ্রামের মৎস্য খাদ্য চাহিদার যোগান দেয় মুহুরী প্রজেক্ট এলাকা।