সবারবেলায় সত্য বলি

ইসলামী ব্যাংকের লকার থেকে ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েব

চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের লকার থেকে প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার গায়েবের অভিযোগ উঠেছে। নগরের ইসলামী ব্যাংক চকবাজার শাখার গ্রাহক এক নারী ২৯ মে (বুধবার) দুপুরে ব্যাংকে গিয়ে দেখেন, তার জন্য বরাদ্দ করা লকারটি খোলা। সেখানে রাখা প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নেই।

তিনদিন পর শনিবার (১ জুন) রাতে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার শিকার রোকেয়া আক্তার বারী নামে ওই গ্রাহক নগরের চকবাজার থানার চট্টেশ্বরী রোডের বাসিন্দা।

রোকেয়ার ছেলে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক জানান, ব্যাংকের লকারে তার মায়ের প্রায় ১৬০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রাখা ছিল। তিনি মাঝে মাঝে ব্যাংকে গিয়ে লকারে রাখা স্বর্ণালঙ্কার যাচাই করে আসতেন। গত ৮ এপ্রিল তিনি যাচাই করেছিলেন।

এরপর গত বুধবার তিনি ব্যাংকে গিয়ে দেখেন, তার লকারটি খোলা অবস্থায় আছে, সেখানে একটি চাবি ঝুলছে। লকারে মাত্র ১০-১১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার আছে।

ব্যাংকের লকার ইনচার্জসহ কর্মকর্তারাও যাচাই করে দেখেন, লকারটি খোলা অবস্থায় আছে। লকারের মাস্টার-কী থাকে লকার ইনচার্জের কাছে এবং আরেকটি চাবি থাকে গ্রাহকের কাছে। দুই চাবি দিয়ে লকার খুলতে হয়। কিন্তু গ্রাহকের চাবি বা মাস্টার-কী ছাড়া লকারটি কীভাবে খোলা হল, কর্মকর্তাদের কেউই এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর গ্রাহককে দিতে পারেননি।

এরপর গ্রাহক রোকেয়া আক্তার চকবাজার থানায় যান। তিনি সরাসরি ওসি’র কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ওসি নিজে আমার আম্মাকে নিয়ে ব্যাংকে যান। ওসিও লকার খোলা অবস্থায় থাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার মিসিংয়ের প্রমাণ পান। তিনি কয়েকটি ছবি তোলেন এবং ভিডিও করেন। এরপর তিনি আমার আম্মাকে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় বাঁশখালীতে কর্মস্থলে ছিলাম। বাসায় ফিরে রাতে আমি লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় যাই। আমরা জিডি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওসি বললেন, এ ধরনের ঘটনায় মামলা করতে হবে। আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় চাইলে তিনি পরদিন ১২টার দিকে থানায় যেতে বলেন।’

রিয়াদ জানান, থানা থেকে ফিরে তারা একজন আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। আইনজীবী থানার পরিবর্তে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। এর ভিত্তিতে সোমবার (৩ জুন) তারা আদালতে মামলা দায়ের করবেন।

জানতে চাইলে চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ওয়ালী উদ্দিন আকবর বলেন, ‘ব্যাংকের গ্রাহক এক নারীর মৌখিক অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক টিম নিয়ে ব্যাংকে যাই। সেখানে লকার খোলা অবস্থায় এবং ভেতরে কিছু স্বর্ণালঙ্কার আমরা দেখতে পাই। গ্রাহকের অভিযোগ প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার মিসিং হয়েছে। আমরা মামলার এজাহার জমা দিতে বলেছিলাম। কিন্তু উনারা আর আসেননি।’

এ বিষয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি দল রোববার ঘটনা তদন্তে ওই ব্যাংকে আসবেন বলে জানা গেছে।

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.