সবারবেলায় সত্য বলি

ভোট পেছানোর ইঙ্গিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ভোটের দিন ধার্য হয়েছে আগামী ৭ জানুয়ারি। তবে ইতোমধ্যে ভোট পেছানোর ইঙ্গিতও মিলেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা যা রাষ্ট্রপতি পর্যন্ত পৌঁছেছে।

সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন পেছাতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। ওই আহ্বানের পর থেকেই বিষয়টি ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি’কে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দল থেকে শুর করে সকল সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ে চলছে আলোচনা।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে তারা পুনঃতফসিলের বিষয়টি বিবেচনা করবে। তবে তা আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হওয়ার পর পুনঃতফসিল করা হলে আইনি জটিলতা তৈরি হতে পারে।

অন্যথায় বিদ্যমান তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে কমিশন। সোমবার (২০ নভেম্বর) পর্যন্ত নির্বাচন পেছাতে ইসির কাছে কোনো পক্ষ থেকে অনুরোধও আসেনি বলে জানা গেছে।

একাধিক নির্বাচন কমিশনার জানান, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ভোট শেষ করতে চায়। বর্তমান কমিশন কোনোভাবেই সংবিধানের বাইরে যাবে না। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলে পুনঃতফসিলের কথা বিবেচনা করবে।

তারা আরও জানান, রাজনৈতিক সমঝোতায় পুনঃতফসিলের নজির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও রয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার চার দিনের মাথায় ওই বছরের ১২ নভেম্বর পুনঃতফসিল করা হয়। ভোটগ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর থেকে পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়।

এবারও বিএনপি নির্বাচনে এলে পুনঃতফসিল করার জন্য সময় ইসির হাতে রয়েছে। কারণ জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ভোটের তারিখ নির্ধারণ করার সুযোগ রয়েছে।

সোমবার নির্বাচন ভবনের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ইসি বেগম রাশেদা সুলতানা। কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে পুনঃতফসিল চাইলে ইসি কোনো পদক্ষেপ নেবে কী না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উনারা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচনে আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করবো। উনারা নির্বাচনে আসতে চাইলে আমরা ফিরিয়ে দেব-এটা হবে না। কিভাবে কী করা যায় তা আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।

এর আগের দিন রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে বিএনপিকে সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি যদি বলে আমরা নির্বাচন করব, আমাদের সহায়তা করেন তাহলে অবশ্যই করব। তবে রাজনৈতিক দলকে কন্ট্রোল করার দায়িত্ব আমাদের না। যারা নির্বাচনে অংশ নেবে তাদের জন্য যতরকম চেষ্টা করা, তা করা হবে। যারা নির্বাচনে আসবে না, তাদের ব্যাপারে কিছু করার নেই।

ইসির কর্মকর্তারা আরও জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কারণে পুনঃতফসিল হলে ইসি নতুন করে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে। ওই কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা কষ্টসাধ্য কোনো বিষয় নয়। বরং আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বড় দলগুলো নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটকেন্দ্রে তাদের পোলিং এজেন্ট থাকেন। পোলিং এজেন্টরাই ভোট সুষ্ঠু করতে সহায়ক হিসাবে কাজ করেন। এতে নির্বাচনে কার্যক্রম পরিচালনা করা কমিশনের জন্য সহজ হয়।

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.