সবারবেলায় সত্য বলি

অলিম্পিক থেকে ইরানকে নিষিদ্ধের দাবি

নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের কারণে ইরানকে আগামী বছর প্যারিস অলিম্পিক থেকে নিষিদ্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। আহ্বানকারীর এ তালিকায় আছেন ইরানের নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী শিরিন এবাদি ও সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বক্সার মাহইয়ার মোনশিপুর। বার্তা সংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে।

মোনশিপুর-এবাদিরা গত জুলাইয়ের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিকে (আইওসি) এ ব্যাপারে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠিতে লেখা হয়, ইরান অলিম্পিক সনদ মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে এবং খেলাধুলার বৈষম্যহীন নীতি লঙ্ঘন করেছে। ইরানকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনায় এক আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

ফ্রেদেরিক থিরিয়েজ নামের সেই আইনজীবী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘খেলাধুলার চর্চা একটি মানবাধিকার। আর অলিম্পিক সনদ এটা নিশ্চিত করেছে, কোনো ধরনের বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। বিশেষ করে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ, যৌনাচার, ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক বা ভিন্নমত, জাতীয় বা সামাজিক উৎস, সম্পদ, জন্ম বা অন্যান্য পদমর্যাদার ব্যাপারে।’

ইরান এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন করায় ক্রীড়াবিষয়ক আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে সুপারিশের জন্য আবেদন করেছেন বলে জানিয়েছেন থিরিয়েজ। এ ছাড়া আইওসি তাঁদের চিঠির উত্তর দিয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন। অলিম্পিকের নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে থিরিয়েজকে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চিত থাকুন, আমরা ইরানের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

এর আগে ১৯৭০ সালে বর্ণবাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বহিষ্কার করেছিল আইওসি। শিরিন এবাদি-মাহইয়ার মোনশিপুরা আইওসিকে যে চিঠি দিয়েছেন, সেটি মনে করিয়ে দিচ্ছে সে ঘটনা।

এবাদি–মোনশিপুরদের দেওয়া চিঠিতে ইরানে কুস্তি, বক্সিং, সাঁতার, সেইলিংয়ের মতো খেলাগুলোতে নারীদের নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের চাওয়া, আগামী বছর প্যারিস অলিম্পিকে দেশটির সব অ্যাথলেটকে অন্তত এই খেলাগুলোতে যেন নিষিদ্ধ করা হয়।

গত মাসে ইরানের জাতীয় প্যারালিম্পিক কমিটির সভাপতি গফুর কারগারি প্যারিসে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতন ও অপরাধের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ জানায় দুটি সংগঠন। নেদারল্যান্ডসে যাওয়া ইরানি শরণার্থী ও দেশটির সাবেক কুস্তিগির শিরিন শিরজাদ বলেন, ‘আমরা স্বাভাবিকভাবে খেলা চালিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখি।’

ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নতুন কোনো ঘটনা নয়। সর্বশেষ গত বছর দেশটির বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। সরকারি মানদণ্ড অনুযায়ী হিজাব না পরার অভিযোগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে নৈতিক পুলিশ গ্রেপ্তার করে ২২ বছর বয়সী তরুণী মাসা আমিনিকে। পরে হাসপাতালে আমিনি মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গ্রেপ্তারের পর ইরানের পুলিশ তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে, যার কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেন গোটা দেশের মানুষ। প্রতিবাদকারীদের ওপরও নির্যাতন চালায় ইরান সরকার। বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.