এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের যাত্রা শেষ হয়ে গেছে সপ্তাহখানেক আগে। কিন্তু এর মধ্যে হুট করে আলোচনায় তাসকিন আহমেদের একটি খবর। সুপার এইটে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে একাদশে ছিলেন না তিনি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ঘুমের কারণে দেরিতে ওঠায় ওই ম্যাচের একাদশে জায়গা হয়নি তার।
তাসকিনের টিম বাস মিস করার ঘটনার সত্যতা অবশ্য মিলেছে।
তবে ওই কাণ্ড নিয়ে যা ছড়ানো হচ্ছে, তার বেশিরভাগকেই গুজব বলে দাবি করেছেন এই ডানহাতি পেসার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ পোস্টে ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
তাসকিন লিখেছেন, ‘আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি সম্প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরেছি যে সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপের একটি ঘটনা নিয়ে অনেক হইচই করা হচ্ছে।
প্রথমত, আমি সবাইকে জানাতে চাই যে বেশিরভাগ সংবাদ এবং তথ্য যা ছড়ানো হচ্ছে, তা কেবল গুজব এবং আমি আশা করি ভক্তরা এটি সেভাবে দেখবেন। দ্বিতীয়ত, আমি ঘটনাটি সেদিন আসলে কী ঘটেছিল তা পরিষ্কার করতে চাই।
এরপর ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে তাসকিন বলেন, ‘আমি স্বীকার করি যে আমি স্বাভাবিকের চেয়ে পরে উঠেছি এবং এর জন্য আমি ইতোমধ্যে পুরো দল এবং ম্যানেজমেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। আমি সকাল ৮-৩৭ মিনিটে এ উঠেছিলাম এবং ৮-৪৩ মিনিটে লবিতে গিয়েছিলাম এবং আমার রাইড প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি সকাল ৯টায় হোটেল ছেড়েছি। আমি সকাল ৯-৪০ মিনিটে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছি, ম্যাচ টসের ২০ মিনিট আগে, সকাল ১০টায়। আমরা সকাল ১০-১৫ মিনিটে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলাম এবং ম্যাচটি সকাল ১০-৩০ মিনিটে শুরু হয়েছিল।
তাসকিনের খবরটি সামনে আসার পর আরও কিছু বিষয় এসেছে সংবাদ মাধ্যমে। এর মধ্যে রয়েছে নেপালের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বমি করার বিষয়টিও। গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে হওয়া খবরের জন্য সাংবাদিকদের প্রতিও নিজের ক্ষোভ ঝারেন তাসকিন।’
তিনি লিখেছেন, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, এই তথাকথিত ক্রীড়া সাংবাদিকরা গুজবের ভিত্তিতে খবর প্রচার/মুদ্রণ করছে এবং যাচাই না করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে যা জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন খেলোয়াড় হিসেবে।
‘যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন আমি আমাদের দেশকে কতটা ভালোবাসি এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটা নিবেদিত, উৎসাহী এবং গর্বিত। আমি জানি আমি সময়মতো টিমের বাসে না উঠার একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেছি, কিন্তু আমি টসের আগেই স্টেডিয়ামে ছিলাম। আমার চূড়ান্ত দলে নির্বাচিত না হওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিলো। যা সঠিক টিম কম্বিনেশন পাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এটি আমার টিম বাসে না ওঠার ব্যর্থতার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।’
‘আমি আশা করি মিডিয়া এবং ক্রীড়া সাংবাদিকরা মিথ্যা গল্প লেখার আগে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করবেন না। এটি কেবল আমাদের খেলোয়াড়দের ক্ষতি করে না বরং আমাদের দেশের সামগ্রিক চিত্রকে ক্ষুণ্ন করে। আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই সৎ এবং পেশাদার সাংবাদিকতা আশা করি যাতে জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি।’
‘ভবিষ্যতে, আমি আইনিভাবে এই ধরনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো যাতে কেউ আমার ক্রীড়াবিদ বা মানুষ হিসাবে আমার সুনাম বা অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা না করে। আমার সকল ভক্তদের ধন্যবাদ তাদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য।’