আসন্ন সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (২৬ নভেম্বর) বিকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের নৌকার প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এদিকে বিএনপি এখন পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা না দেওয়ায় নির্বাচন উৎসবমুখর করতে আওয়ামী লীগের আগ্রহীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারবেন বলে জানা গেছে। আর তাতেই একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন।
তবে কিছুটা স্বস্তির হওয়া বইছে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান), চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া), চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) এবং চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে। কারণ এই চারটি আসনে নৌকার ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম–১ (মিরসরাই) আসনের মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গিয়াস উদ্দীন নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি আজকের বেলাকে বলেন, আমি দীর্ঘকাল ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছি। এবার প্রত্যাশা করেছিলাম, দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। কিন্তু নেত্রীর বিবেচনায় আমি মনোনয়ন পাইনি। তবে আমার সমর্থকরা চাপ সৃষ্টি করেছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন যারা
মনোনয়ন না পেয়ে চট্টগ্রাম–১১ (বন্দর–পতেঙ্গা) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। তিনি বলেন, যেহেতু নির্বাচন করতে দলের কোনো বাধা নেই; নেত্রী বলে দিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা যাবে। তাই নির্বাচন করব।
চট্টগ্রাম–১৪ (চন্দনাইশ–সাতকানিয়া আংশিক) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটির সদস্য আবদুল জব্বার চৌধুরী।
এছাড়াও সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছাড়েন এম এ মোতালেব। তিনি চট্টগ্রাম–১৫ (লোহাগাড়া–সাতকানিয়া আংশিক) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, কর্মী-সমর্থকরা আশায় ছিলেন। তারা বলছেন— নির্বাচন করতে। যেহেতু নির্বাচন করলে দলের কোনো বাধা নেই, তাই নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমি যেভাবে সর্বসাধারণের ভালোবাসা পেয়ে এসেছি তেমনি সকলের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমি সকলের দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করছি। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিব।
চট্টগ্রাম–১৬ (বাঁশখালী) আসনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি বাঁশখালীর মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের ৩০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের অধীনে বাঁশখালীর লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করেছি। পুরো বাঁশখালীর মসজিদ, মন্দির ও বিভিন্ন এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। এলাকার মানুষজন আমাকে এমপি হিসেবে দেখতে চায়।
একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির লিটন। তিনি বলেন, বাঁশখালীর কর্মী-সমর্থকরা আশায় ছিলেন। যেহেতু নির্বাচন করতে দলের কোনো বাধা নেই; নেত্রী বলে দিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করা যাবে। তাই নির্বাচন করবো।