শহরের দারিদ্র্য কমলেও আর্থিক দুর্বলতা বেড়েছে। মধ্যবিত্তের আয় কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ, একইসঙ্গে কমেছে খাদ্য গ্রহণও। দেশের জনসংখ্যার ২১ দশমিক ১১ শতাংশ মানুষ, অর্থাৎ প্রতি পাঁচ জনে একজন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। শহর-গ্রামের তুলনা করলে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার পরিমাণ গ্রামে বেশি।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) থেকে প্রকাশিত ‘খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২’ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য ওঠে এসেছে।
বিবিএস’র অডিটরিয়ামে আয়োজিত এ প্রকাশনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান।
জরিপের তথ্যানুসারে, গ্রামে বসবাসরত জনসংখ্যার ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তবে শহরে এ হার ১৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। দেশের মানুষ এখন প্রতিদিন গড়ে ৩২৮ গ্রাম ভাত গ্রহণ করে থাকেন। কিন্তু ২০১৬ সালে ভাত গ্রহণের পরিমাণ ছিল ৩৬৭ গ্রাম। ওই সময় দৈনিক ১৩ দশমিক ৬ গ্রাম ডিম গ্রহণ করা হলে এখন তা কমে ১২ দশমিক ৭ গ্রামে নেমে এসেছে। একই সময়ে পেঁয়াজ গ্রহণের পরিমাণও কম এসেছে।
‘দেশে বৈষম্য অ্যালার্মিং লেভেলে পৌঁছে গেছে’ উল্লেখ করে সভায় বিশেষ অতিথি হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের মোট আয়ের ৩০ শতাংশ ৫ শতাংশ উচ্চ আয়ের মানুষের হাতে আবদ্ধ হয়ে আছে। যেখানে নিম্ন আয়ের ৫০ শতাংশ মানুষের হাতে আছে মাত্র ১৮ শতাংশ আয়। তাই বৈষম্য এখন দারিদ্র্যের চেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরের দারিদ্র্য কমলেও আর্থিক দুর্বলতা বেড়েছে। মধ্যবিত্তের আয় কমেছে প্রায় ১০ শতাংশ, একইসঙ্গে কমেছে খাদ্য গ্রহণও।
অনুষ্ঠানে জরিপের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিবিএসের উপপরিচালক এবং খানার আয় ও ব্যয় জরিপ প্রকল্পের পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য কাউসার আহাম্মদ, বিবিএসের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল, কিন্তু তিনি আসতে পারেননি। সশরীর উপস্থিত হতে না পারলেও তিনি ভিডিও বার্তা দেন।