রাউজানে পুলিশের গাড়ি থেকে আসামি ছিনিয়ে গণপিটুনিতে মেরে ফেলার ঘটনায় মামলার পর পুরুষশূন্য হয়ে গেছে কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরের দরজায় ঝুলছে তালা। এছাড়া বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট। এলাকাজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হাকিম বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। হত্যা, কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। মামলার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর অধিকাংশ পুরুষ গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
পুলিশ জানায়, মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্তের পর দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পঞ্চপাড়া গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে সুনসান-নীরবতা। হযরত আশরাফ শাহ মাজারে ভক্তদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। বন্ধ রয়েছে আশপাশের দোকানপাট। বড় বাজার ঈসান ভট্টের হাটে কিছু দোকান খোলা থাকলেও নেই তেমন লোকজন। এছাড়া কিছু নারী ও শিশুকে দেখা গেছে। যাদের দেখা গেছে তাদের চোখে-মুখেও আতঙ্কের ছাপ। ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়।
যোগাযোগ করা হলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আসামি ছিনিয়ে গণপিটুনিতে হত্যা মামলায় সংখ্যা বা কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার পর জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) গহীন অরণ্য থেকে শিবলী সাদিক হৃদয়ের লাশের কঙ্কাল ও পড়নের কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। ১৩ দিন আগে (২৮ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে তাকে অপহরণ করে মারমা যুবকরা। অপহরণকারীদের মুক্তিপণের ২ লাখ দিয়েও জীবিত ফিরতে পারেনি হৃদয়।
এদিন সকাল ১১টার দিকে গ্রেপ্তার প্রধান আসামি উমংচিং মারমাকে নিয়ে ফিরে আসার সময় কদলপুর আশরফ শাহ মাজারের সামনে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি আটকে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এরপর গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান উমংচিং মারমা।