সবারবেলায় সত্য বলি

আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি—দেখি কে কত বড় শক্তিশালী: মেয়র শাহাদাত

অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার নামে রোগী ও মৃত ব্যক্তির স্বজনদের জিম্মি করা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না উল্লেখ করে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনে বলেছেন, যারা এই সিন্ডিকেট গড়ে তোলে, রোগীর দুঃসময়ে তাদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে বাড়তি অর্থ আদায় করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছি—দেখি কে কত বড় শক্তিশালী! চট্টগ্রামকে জিম্মি হতে দেব না।

বুধবার (১৮ জুন) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে অ্যাম্বুলেন্স সেবায় ভাড়া নির্ধারণ ও যৌক্তিকতার প্রশ্নে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তসলিম উদ্দিন।

এতে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াস চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সারোয়ার আলম প্রমুখ।

মেয়র বলেন, ২০১৮ সালে সবার সম্মতিক্রমে যে ভাড়া নির্ধারিত হয়েছিল, তা আজও কার্যকর আছে। তবে দীর্ঘ সাত বছরে খরচের হিসাব পরিবর্তিত হয়েছে, এজন্য যৌক্তিক হারে ভাড়া পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ রয়েছে। তবে সেটি হতে হবে একমাত্র স্বচ্ছতা ও নীতিমালার ভিত্তিতে—শোষণের ভিত্তিতে নয়।

আমি নিজে দেখেছি, রোগী মারা গেলে কিছু ওয়ার্ডবয় কৌশলে নির্দিষ্ট অ্যাম্বুলেন্স ডেকে দেয়। এটি এক ধরনের ব্যবসা, যেখানে ভাগ বসায় ফোর্থ ক্লাস কর্মচারী, কিছু প্রভাবশালী, এমনকি রাজনৈতিক নেতারাও। এ সিন্ডিকেট ভাঙতে হলে একাধিক পক্ষকে নিয়ে সমন্বিত সভা করতে হবে। শুধু নীতিমালা করলেই হবে না, এর বাস্তবায়নে নজরদারি ও কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন।

মেয়র বলেন, আমরা যদি এখনই সংস্কার না করি, তবে এই দুর্নীতি হাসপাতালের প্রতিটি শিরায়-উপশিরায় ছড়িয়ে পড়বে। আমি পরিষ্কার করে বলছি—কোনো অনিয়ম, শোষণ বা দুর্নীতি আমরা প্রশ্রয় দেব না। যত দূর যেতে হয়, আমি প্রস্তুত আছি। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না।

ফার্মেসিগুলোর অনিয়ম প্রসঙ্গেও ডা. শাহাদাত বলেন, হাসপাতালের সামনে থাকা কিছু ফার্মেসি চিকিৎসকদের নির্ধারিত রেট উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম নেয়। গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার—সবকিছুর দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেয়। সিন্ডিকেট করে বাজার থেকে পণ্য তুলে ফেলছে। এরা ‘লুটপাটের স্বর্গরাজ্য’ বানিয়ে ফেলেছে হাসপাতালের গেটসংলগ্ন এলাকাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমি বলছি—সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট টিম মাঠে থাকবে, প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করা হবে। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চাইলে আমাদের আগে হাসপাতাল ও তার চারপাশের এই অসাধু ব্যবসা ও শোষণ বন্ধ করতে হবে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.