বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানিতে তাঁর পক্ষে দাঁড়ায়নি কোনো আইনজীবী। ফলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে আগামী ২ জানুয়ারি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। তবে এইদিন আসামি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট আদালতের নাজির নেছার আহমদ বলেন, ‘আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ জামিন পেছানোর আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত শুনানি পিছিয়েছেন। আগামী ২ জানুয়ারি এই মিছকেইস মামলার শুনানির দিন ধার্য্য করা হয়েছে।’
আদালত সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেন মহানগর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূইয়া। এছাড়াও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকসহ শতাধিক আইনজীবী এইদিন শুনানিতে অংশ নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। আদালতের প্রবেশ মুখে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যতীত সকল যান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। ব্যক্তিগত গাড়িও তল্লাশি করে এরপর আদালত এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছিল। এছাড়া আদালতে প্রবেশমুখেই পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।
সম্প্রতি, চিন্ময়কাণ্ডে আদালত প্রাঙ্গণের অদূরে আইনজীবী আলিফ খুন এবং পুলিশের ওপর হামলা-গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে তাঁর বাবা এবং ভাই। বাবার করা হত্যা মামলায় ৩১ জনকে আসামি করা হলেও ভাইয়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয় ১১৬ জনকে।
সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবী সনাতন জাগরণ মঞ্চের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অ্যাডভোকেট শুভাশিস শর্মাও ওই মামলার ৩৩ নম্বর আসামি। এছাড়াও তাঁর অনুসারী আরও ৫০ জনের অধিক আইনজীবীকেও আসামি করা হয়েছে।
মামলায় আসামি হওয়ার ফলে এসব আইনজীবীদের অনেকেই এখন গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন। অনেকে তাদের ওপর হামলার আশঙ্কাও করছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে সমাবেশ হয় ‘সনাতন জাগরণ মঞ্চ’ ব্যানারে। ওই সমাবেশের অন্যতম উদ্যোক্তা ও মুখপাত্র ছিলেন চিন্ময়। এরপর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময়কে।