সম্প্রতি সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দা প্রধান এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত হামাসকে ৭ অক্টোবর হামলার জন্য এবং ইসরায়েলকে গাজায় চলমান রক্তাক্ত পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন।
তুর্কি-আল-ফয়সাল বর্তমানে সরকারের কোনো পদে না থাকলেও তিনি এখনো সৌদি রাজদরবারে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি হামাসকে যেকোনো বয়সী এবং লিঙ্গে বেসামরিক মানুষের ওপর হামলার জন্য দায়ী করি, কারণ তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এমন হামলা হামাসের ইসলামিক মতালম্বী পরিচয়কে মিথ্যা প্রমাণিত করে।
মঙ্গলবার হাউস্টনে রাইস ইউনিভার্সিটির বেকার ইনস্টিটিউট অব পাবলিক পলিসিতে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমি ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার নৈতিক ভিত্তি প্রদানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য হামাসকে দায়ী করছি। যে সরকারকে বৈশ্বিকভাবে পরিহার করা হয়েছে, এমনকি ইসরায়েলের অর্ধেক মানুষ যে সরকারকে ফ্যাসিস্ট, দুর্বৃত্ত এবং ঘৃণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ফিলিস্তিনের মানুষকে অবমূল্যায়ন করার জন্য দায়ী করি হামাসকে- যেটা ইসরায়েলিরা এতদিন করে এসেছে।
এ সময় ফিলিস্তিনি মানুষকে এই যুদ্ধাবস্থা থেকে মুক্তি দিতে সৌদি আরবের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব অগ্রাহ্য করার কারণে হামাসকে দায়ী করেন বর্ষীয়ান এই কূটনীতিক।
তবে সমানভাবে, আমি গাজায় ফিলিস্তিনি নিরপরাধ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের নির্বিচার বোমাবর্ষণ এবং তাদের জোরপূর্বক সিনাইয়ে তাড়ানোর চেষ্টার নিন্দা করছি। আমি ইসরায়েলিদের দ্বারা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি শিশু, নারী-পুরুষদের নির্বিচারে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানাই। দুইটি ভুল কাজ দিয়ে কোনো একটি বিষয়কে সঠিক করা যায় না।
তিনি আরও বলেন, আমি আমেরিকান মিডিয়াতে প্রায়ই শুনি কোনো উসকানি ছাড়াই না কি এ হামলা করা হয়েছে। একটি শতাব্দীর তিন ভাগ সময়জুড়ে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে আর কী উসকানি প্রয়োজন আছে?
এ সময় তিনি পশ্চিমাদের একচোখা নীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আমি পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের প্রতিও নিন্দা জানাচ্ছি। কেননা ফিলিস্তিনিদের দ্বারা কোনো ইসরায়েলির মৃত্যু ঘটলে তারা মরা কান্না কাঁদেন অথচ ফিলিস্তিনিদের ইসরায়েলিরা হত্যা করলে সে বিষয়ে কোনো দুঃখ প্রকাশ করতে পর্যন্ত নারাজ। এই যুদ্ধে কোনো নায়ক নেই, আছে শুধু ক্ষতিগ্রস্তরা।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। হামাসের হামলার জবাবে গাজায় টানা বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। অব্যাহত বোমাবর্ষণের মধ্যেই এবার সেখানে বড় ধরনের স্থল হামলা চালাতে গাজা সীমান্তে বহু সেনা ও সমরাস্ত্র জড়ো করেছে ইসরায়েল।