একটি স্বাধীন দেশে তথ্য চাইতে গেলে কেন মামলা-হামলার শিকার হতে হবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এর জন্য আমলাতন্ত্রকে দায়ী করে তিনি বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে তথ্য কমিশন চালিয়েছে। এ কারণেই মানুষকে তথ্য চাইতে গিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তথ্য কমিশন ভবনে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘তথ্য চাইতে গেলে একজন মানুষকে কেন মামলা-হামলার শিকার হতে হবে। কারণ হচ্ছে, এ আমলাতন্ত্রের মধ্যে এখনো ব্রিটিশ শাসনামলের মতো এক গোপনীয়তা কাজ করে। কর্মকর্তারা মনে করেন তথ্যের মালিক কেবল তিনিই, অথচ তথ্যের মালিক কিন্তু জনগণ।’
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তথ্য কমিশন দলীয় ক্যাডার দ্বারা পরিচালিত হয়েছে। কমিশনের শীর্ষ নেতারা ছিলেন দলীয় ক্যাডার। এ অবস্থার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, নতুন বাংলাদেশে আমরা সেই প্রত্যাশা করি।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয়, বাংলাদেশে কমিশন শব্দ যতগুলো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত, তার সব প্রতিষ্ঠান আমাদের অবসরপ্রাপ্ত দলীয় প্রভাবে প্রভাবিত ব্যক্তিদের রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে পরিণত হয়েছে। যে কারণে আমরা কাগজে-কলমে অনেক কিছুই পেয়েছি, কিন্তু বাস্তবে দুর্নীতি দমন কমিশন হোক, নির্বাচন কমিশন হোক, মানবাধিকার কমিশন কিংবা অন্যান্য কমিশন হোক, আইন অনুযায়ী তাদের সত্যিকারের ভূমিকা পালন করতে এখনও তারা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।’
তথ্য আইনকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্য কমিশন এবং তথ্য অধিকার আইন বিষয়টি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নজরে এসেছে কি না তা আমি নিশ্চিত নই। যেভাবে কমিশন এতদিন চলেছে, সেভাবে আর চলতে পারবে না এই নতুন বাংলাদেশে।’
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন তথ্য অধিকার আইন প্রণীত হয়, তখন সেটাকে একটা অর্জন হিসেবেই গণ্য করা হচ্ছিল। কিন্তু পরে দেখা গেল এই অর্জন কেবলই কাগজে–কলমে, তার প্রাপ্তিটা সরাসরি পাওয়া যায়নি।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তবে তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। তথ্য কমিশন বাংলাদেশের পরিচালক এস এম কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।