সবারবেলায় সত্য বলি

এমন কী হল যে, বড় বড় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মামলা একের পর এক নিষ্পত্তি হওয়ার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, এমন কী হল যে, বড় বড় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল?

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পুরানা পল্টনের হোটেল পুস্পদামে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কমিটির শপথ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘ফ্যাসিস্ট আমলে অনেকেই খালাস তো দূরের কথা জামিনও পায়নি। এখন এমন কী হল? বড় বড় মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেল! এর অর্থ হচ্ছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। বিশেষ কোনো দলের নিয়ন্ত্রণে বা ইঙ্গিত চলছে।’

তিনি বলেন, ‘একটি ভালো রাষ্ট্রের বড় লক্ষণ হলো বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। বিচার বিভাগ স্বাধীন হলে বিচারকরা আইন অনুযায়ী বিচার করবে। সরকারের চাপে বিচার করবে না, কারও ইঙ্গিতে বিচার করবে না। আমি চাই, এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের কারও বিচার হলে সেখানে যেন কোনো চাপ প্রয়োগ করা না হয়। আইনের মাধ্যমে যদি আমাকেও আটকে দেওয়া হয়, সেখানেও যেন চাপ প্রয়োগ করা না হয়।’

ফয়জুল করীম বলেন, ‘বিচারকদের মনে চাকরি থাকা না থাকা ও পদোন্নতি হওয়া না হওয়ার টেনশন থাকলে তাদের পক্ষে ন্যায়বিচার করা সম্ভব না। কমপক্ষে এক জায়গায় নিরপেক্ষ থাকা উচিত, তা হলো বিচার বিভাগ। আমরা চাই, কারও ইঙ্গিতে বিচার হবে না, ইনসাফের সাথে বিচার হবে। বিচারকদের ন্যায় বিচারক হতে হবে। আমি বিচারকদের নিরপেক্ষতা চাই। বিচারক ও বিচারালয় স্বাধীনতা চাই। দেশের বিচারালয় স্বাধীন না থাকলে, সে দেশে কোনো মানুষ বসবাস করতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ১০০ আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখার কথা বলা হয়েছে। আমরা কোটাবিরোধী আন্দোলন করেছিলাম। তাই নারীদের জন্য সংসদে কোনো সংরক্ষিত আসন চাই না। নারীদের জন্য আমরা সাধারণ নির্বাচন চাই। নারীদের সমান অধিকারের কথা বলে তাদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা মানে তাদেরকে অপমান করা। নারীদের অযোগ্য মনে করে এটা করা হয়। নারীদের অযোগ্য মনে করবেন না। তাদেরকে লড়তে দিন। আমরা চাই সকলে সরাসরি ভোটে লড়াই করুক।’

মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, ‘আমরা সব ক্ষেত্রে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন চাই। ৩০০ বা ৪০০ যাই হোক সব জায়গায় পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। পিআর‌ পদ্ধতির নির্বাচন না হলে কোনো অবস্থাতেই পেশী শক্তি ও কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। পিআর পদ্ধতি হলে কোনো ব্যক্তিকে নয় প্রতীকে ভোট হবে। যে প্রতীক যত ভোট পাবে সে অনুযায়ী তাদের প্রতীক সংসদে আসন পাবে। এমন পদ্ধতি নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাশা করে।’

তিনি বলেন, ‘সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন দেওয়া হলে সে নির্বাচন ব্যর্থ হবে। আমরা জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাস্তায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আমাদের রক্ত ও ত্যাগের উপরে বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিস্ট হটতে বাধ্য হলেও এখন আবার নব্য ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশকে দখল করেছে। এক চাঁদাবাদ তাড়িয়ে আরেক চাঁদাবাজকে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ফয়জুল করীম বলেন, ‘লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি না করে নির্বাচন দিলে সে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। মানুষ আবারও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন চাই। যে নির্বাচনে সকল ভোটাররা তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সকল ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। যেখানে পেশীশক্তি থাকবে না। কালো টাকার ছড়াছড়ি থাকবে না। ভোটাররা যাতে তাদের আদর্শ, নীতিবান মনের মতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে এমন পরিবেশ চাই।’

এসআই/আজকের বেলা
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.