বন্দরনগরী চট্টগ্রামের রাজপথে আবারও মাঠে নেমেছে ছাত্র-জনতার। মিছিল-স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছে চট্টলার রাজপথ।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে শিক্ষার্থীদের মিছিল-স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে নগরের ষোলশহর থেকে বহদ্দারহাট এলাকা।
এদিন সপ্তাহব্যাপী ‘রেজিস্ট্যান্স উইক’ নামে একটি কর্মসূচি শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে যেসব ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, সেসব পয়েন্ট অভিমুখে রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করা হয়। যার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় হাজারো শিক্ষার্থী ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হন। সেখানে প্রায় ৪০মিনিট ধরে তারা সমাবেশ করেন।
এরপর মিছিল নিয়ে মুরাদপুর মোড়ে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে কিছুক্ষণ অবস্থান শেষে একটি অংশ মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট মোড়ে যান। আরেকটি অংশ শুলকবহর এলাকায় অবস্থান নেন।
এর আগে ষোলশহর মোড়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি ‘আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ’ উল্লেখ করে বলেন, এই বাংলাদেশ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের। আমরা বাংলাদেশি। আমাদের আন্দোলনে আমার হিন্দু বন্ধুরা এসেছে, মুসলিম বন্ধুরা এসেছে, খ্রিষ্টান বন্ধুরা এসেছে, প্রত্যেক ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাই এসেছে। যারা মন্দিরে হামলার চেষ্টা করেছে তাদের আমরা প্রতিরোধ করব। আমরা ঢাল হয়ে দাঁড়াব। আমাদের পরিচয় একটা, এখানে কোনো সংখ্যালঘু থাকবে না, এখানে সবার পরিচয় মানুষ।
সমন্বয়ক রাফি বলেন, এটা সাধারণ শিক্ষার্থী আর সাধারণ মানুষের আন্দোলন, বিজয়ও তাদের। আমি যেমন, আপনিও তেমন। এখানে আলাদা কিছু নেই, আলাদা কোনো পদ নেই। যখন আমরা মাঠে নামব, এখানে আমরা সবাই এক। যদি কেউ সমন্বয়কের নামেও চাঁদাবাজি করে, অদের প্রতিহত করবেন। কাউকে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেবেন না। কোনো বৈষম্যের জায়গা বাংলাদেশে হবে না। কোনো অন্যায়ের জায়গা বাংলাদেশে হবে না।
চট্টগ্রামের এই অন্যতম সমন্বয়ক বলেন, ফ্যাসিবাদকে কেউ প্রশ্রয় দেবেন না। যদি কেউ প্রপাগাণ্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করে, গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করে, আপনারা সবাই মিলে ঐক্যবন্ধ হয়ে প্রতিহত করবেন। আমাদের ভাইদের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না। শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না। আমরা সবাই সোচ্চার থাকব। যদি কোনোভাবে কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে আমরা আমাদের শহীদ ভাইদের জবাব দিতে পারব না। যারা রক্ত দিয়ে গেছে তাদের জবাব দিতে পারব না। সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে, আপনি আপনার আশপাশের সবাইকে সোচ্চার রাখবেন, যদি আবার ডাক আসে আবার রাজপথে নামব।
কর্মসূচি চলার সময় শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামের মুরাদপুর ও বহদ্দারহাট মোড়ে সংঘর্ষে নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করেন এবং শহীদদের স্মরণে দোয়া ও প্রার্থনা করেন।