সবারবেলায় সত্য বলি

মিরসরাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাড়ছে পানি

পানিবন্দি লাখো মানুষ, নেই বিদ্যুৎ-মোবাইল নেটওয়ার্ক

মিরসরাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢল ও ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে ওঠায় কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাতে হালদা নদীর বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার পর পানির তীব্রতা আরো বাড়ে। যার ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ।

দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে পানি ওঠায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন যানবহান আটকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ঢাকামুখী লেন ব্যবহার করতে না পারায় উদ্ধার কাজেরও বিঘ্ন ঘটছে।

শুকনো খাবার ও উদ্ধার অভিযানে যাওয়া যুব রেডক্রিসেন্ট-এর কর্মী রায়হান ইসলাম জানান, মিরসরাই এবং ফেনীতে পানিবন্দি মানুষকে সহযোগিতা এবং উদ্ধার কাজে দূর-দূরান্ত থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবীরা অনেকেই যানজটের কারণে পথেই আটকে রয়েছেন।

জানা যায়, মিরসরাই উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, ধুম ও ইছাখালী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার দিনান্তের মধ্যে অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ে গেলেও বাড়ি-ঘর ফেলে যাননি অসংখ্য মানুষ। পরবর্তীতে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে এসব এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় উদ্ধার কাজে নানা বিঘ্ন ঘটছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বেলা ২টা থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে বোট নিয়ে এসব এলাকায় উদ্ধার কাজ চালান বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা শুকনো খাবারেরও ব্যবস্থা করে।

d5bb13c1 08b2 4d5a a4bd 104a79128d62

ওইদিন দিবাগত রাতে করেরহাট, বারইয়ারহাট, শুক্রবারইয়াহাট, বাংলাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার স্কুল, মাদরাসা, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মানুষকে খাবার সরবরাহ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আজিজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে তার বাড়িতে অসংখ্য মানুষ আশ্রয় নেন। তিনি তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা রেখেছেন। এছাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেওয়া মানুষদেরও খাবার সরবরাহে সহযোগিতা করেন।

শুক্রবার দিনভর লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং মিরসরাই-এর উদ্যোগে লায়ন এমডিএম মহিউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী মিরসরাই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কয়েক ট্রাক শুকনো খাবার এবং রান্না করা খবার নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় যান এবং সেখানে তিনি খাবার বিতরণ করেন।

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহীদুল ইসলাম চৌধুরী, মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল করিমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উদ্ধার ও শুকনো খাবার বিতরণ করছেন বিভিন্ন এলাকায়।

মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী শুক্রবার বিকেলে জানান, বৃহস্পতিবারের তুলনায় পানির তীব্রতা বেড়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা বিচ্ছিন্ন, এখানে মোবাইল নেটওয়ার্কও নেই। এতে উদ্ধারের থেকে নিশ্চিত সংবাদ পাওয়া দূরহ হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনী ও রেডক্রিসেন্ট-এর কর্মীরা পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে কাজ করছে।

এছাড়া অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী করেরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধার ও তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করছে বলেও জানান তিনি।

এসএস/এসআই
আজকের বেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

Get real time updates directly on you device, subscribe now.